প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুঃ জানা যাবে স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ পশু নিবন্ধিত হবে যা গ্রাহকদের পশুগুলোর স্বাস্থ্য ইতিহাস দেখার সুযোগ দিবে।


প্রথমবারের মতো, বাংলাদেশ একটি অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করেছে, যা গ্রাহকদের বারকোড স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নিবন্ধিত গবাদি পশু সম্পর্কে ব্যাপক তথ্যের অ্যাক্সেস প্রদান করবে।

বারকোড স্ক্যান করে গ্রাহকরা নিবন্ধিত গরুর জাত, খাদ্য পছন্দ, এবং স্বাস্থ্য রেকর্ড (যেমন টিকা প্রদানের অবস্থা) এবং আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে। ডাটাবেসটি নিবন্ধিত গরুর রোগ ট্র্যাক করবে যা তার মৃত্যু পর্যন্ত চলবে। এটি গরুর অবস্থান এবং মালিকের তথ্যও ধারণ করবে।

প্রাথমিকভাবে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০,০০০ গবাদি পশু অনলাইন নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। নিবন্ধিত গবাদি পশুদের কানে বারকোড দিয়ে ট্যাগ করা হবে।

“প্রাণীসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্প” (LDDP) এর অধীনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক “বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড নেটওয়ার্ক ফর লাইভস্টক ইনফরমেশন (BINLI)” শিরোনামের এই পাইলট প্রোগ্রামটি শুরু করা হয়েছে।

cattle with ear tag
দ্য ডেইলি স্টারের সাথে কথা বলার সময়, BINLI-এর ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার অরবিন্দ কুমার সাহা বলেন, কানের ট্যাগ প্রয়োগ টিকাদান, চিকিৎসা এবং সামগ্রিক প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনাকে প্রবাহিত করবে। উপরন্তু, এর মাধ্যমে মাংস এবং গবাদি পশু পণ্য রপ্তানি প্রক্রিয়াকেও উন্নত করবে।

নিবন্ধিত গবাদি পশুর মধ্যে ৪,৮০০টি গবাদি পশুকে বীমা পলিসির আওতায় আনা হবে যা গবাদি পশুর মালিকদের তাদের পশুর মৃত্যু বা অক্ষমতার কারণে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে।

জনাব সাহা আরো বলেন, “আমরা প্রায়ই চুরির কথা শুনি। গবাদি পশু নিবন্ধিত হলে চুরির ঘটনাও কমবে” ।

এছাড়াও, যে কোনো নবজাতক বাছুর জন্মাবার কয়েক দিনের মধ্যেই তার বিবরণ ডাটাবেসে রেকর্ড করা হবে।

প্রাথমিকভাবে, নিবন্ধনের জন্য অধিক গবাদি পশু উৎপাদনের ১৬টি উপজেলা চিহ্নিত করা হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো- বরিশালের আগৈলঝাড়া, পিরোজপুরের নাজিরপুর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, কুমিল্লার আদর্শ সদর, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, বাগেরহাটের মোল্লার হাট, খুলনার ডুমুরিয়া, জামালপুরের মাদারগঞ্জ, রাজশাহীর ত্রিশাল, শাহজাদাপুরের চিফরাজপুর, সিরাজগঞ্জের ডুমুরিয়া, রংপুরের পীরগঞ্জ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও সিলেট সদর।

ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কয়েকটি খামারে ৯৬টি গবাদি পশুর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন।

এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আবদুর রহিম বলেন, “আমরা যখন বিদেশে মাংস বা গবাদিপশুর পণ্য রপ্তানি করি, তখন আমদানিকারকরা গবাদি পশুর রোগসহ সব ইতিহাস জানতে চান। এই ডাটাবেজ মাংস রপ্তানিতে সহায়তা করবে।”

লেখকঃ ডাঃ তায়ফুর রহমান

ডাঃ তায়ফুর রহমান; ডিভিএম, এম এস, এমপিএইচ ; ন্যাশনাল টেকনিক্যাল এডভাইজার-এপিডেমিওলজি, জাতিসঙ্ঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা, ঢাকা; ব্লগ এডমিনিষ্ট্রেটর, ভেটসবিডি

এটাও দেখতে পারেন

DLS

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের কারাদণ্ড

দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে ছাগল উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ছাগলের শেড নির্মাণ প্রকল্পে অতিরিক্ত বিল প্রদান ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.