আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চল অর্থাৎ কুড়িগ্রাম লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। প্রায় সকলের বাড়িতেই পানি উঠেছে। বন্যায়
মৃত গরুর ভেসে যাওয়া ছবি দেখে খুবই খারাপ লাগল। মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি এসব প্রাণিদেরও বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।
বন্যা কবলিত এলাকায় প্রাণিদের জন্য করণীয়:
✓আপনার গৃহপালিত প্রাণি, পাখিগুলোকে নিরাপদ ও উঁচু স্থানে সরিয়ে নিবেন। কাজটি পানি কাছে আসার আগেই করতে পারলে ভাল। অথবা আপনার প্রাণিগুলোকে সরিয়ে কোথায় রাখবেন তা পূর্ব থেকেই নির্বাচন করে নিবেন।
✓কিছু প্রাণি যেমন, কুকুর, বিড়াল, বনবিড়াল বা খাটাশ বা গারোয়া (স্থানীয় ভাষা), শেয়াল, খরগোশ ইত্যাদিকে উদ্ধার করার জন্য পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে ভাল।
✓বন্যপ্রাণি উদ্ধার করতে বা করে এনে উঁচু স্থানে রেখে কোন মানুষের জীবনের ক্ষতি করা যাবে না। এটা আমাদের এলাকার জন্য প্রযোজ্য নয়।
✓প্রাণিগুলোকে উদ্ধার করার পর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। যদি প্রাণিগুলোকে কম পানিতে রাখতেই হয় (অর্থাৎ উঁচু স্থান না পেলে তবে মোটেই নিরাপদ নয়) তবে সেখানে গর্ত, ধারালো ধাতব বস্তু কিংবা ময়লা-আবর্জনার স্তুপ আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
✓ভেলা, নৌকা, উঁচু শক্ত মাঁচাতেও রাখতে পারেন।
**বেঁচে থাকা প্রাণিদের যত্ন:
✓বেঁচে থাকা প্রাণিদের জন্য সাধারণত পরিষ্কার পানি, শক্তিদায়ক খাদ্য এবং শুকনো আবাস নিশ্চিত করতে হবে। কখনই বন্যার পানি পান করাবেন না। মনে রাখবেন, আপনার জন্য যেমন পরিষ্কার পানি দরকার আপনার প্রাণিগুলোর জন্যও তেমনি পরিষ্কার পানি দরকার।
***বন্যা কবলিত স্থানের প্রাণিদের খাদ্য:
বন্যা কবলিত স্থানের প্রাণিগুলোর (আমাদের অঞ্চলে গরু, ছাগল, ঘোড়া, মহিষ, ভেড়া ইত্যাদি) জন্য সবথেকে বড় সমস্যা হয় খাদ্য নিয়ে। তাই এটি নিয়ে একটু আলাদাভাবে বলার প্রয়োজনবোধ করছি। অনেক গরুই পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সেজন্য-
✓যদি খড় না থাকে (বন্যার কথা ভেবে মজুদ রাখা দরকার ছিল) তবে দানাদার খাদ্য খাওয়াবেন। তবে অল্প অল্প করে খাওয়াবেন। এই দানাদার খাদ্য একসাথে অনেক না দিয়ে ভাগ ভাগ করে ২-৩ ঘন্টা পরপর দিবেন।
✓মনে রাখবেন এখন আপনি গরুকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য খাওয়াচ্ছেন। কুরবানি ঈদে বিক্রি করার জন্য অর্থাৎ মোটাতাজা করতে নয়। হঠাৎ করে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই মূলত পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া ইত্যাদির কারণ। এতে আপনার প্রাণি মারাও যেতে পারে।
✓প্রাণিকে ভাত, ভাতের মাড়, চাল কাঁঠালের ছাল, কিচেন ওয়াস্ট (রান্না ঘরের ফেলে দেয়া সবজি ছাল) ইত্যাদি খাওয়াবেন না। তবে পূর্বে খাইয়ে থাকলে খাওয়াতে পারেন। কিন্তু কখনও অতিরিক্ত খাওয়াবেন না।
✓খড় বা যেকোন খাদ্য বন্যার পানিতে ভিজলে না খাওয়াবেন না। ভেজা দানাদার খাদ্য, কুঁড়া সর্বদাই বর্জনীয়।