
সেইফ বায়ো প্রোডাক্টস- প্রাণিস্বাস্থ্য সেবায় নবীন একটি প্রতিষ্ঠান। সময়ের হিসেবে নবীন হলেও এর পরিচালনা পর্ষদে আছেন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মুখ। কথা হলো প্রকিষ্ঠানটির স্বপ্নদ্রষ্টা ডাঃ সরোয়ার জাহান-এর সঙ্গে। কথপকথনের সারাংশ থাকলো ভেটসবিডি’র পাঠকদের জন্য।
ভেটসবিডিঃ কোম্পানিটির ইতিহাসটা জানতে চাই
ডাঃ সারোয়ারঃ সেইফ বায়ো প্রোডাক্টস্ লিঃ ২০১১ সালের ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশের জয়েন্টষ্টক কোম্পানি হিসাবে নিবন্ধিত হয় এবং পোল্ট্রি, ডেইরী ও মৎস্য সেক্টরে এক নতুন আমদানি নির্ভর কোম্পানি হিসাবে আবির্ভুত হয়। তখন অতি অল্প পরিসরে এটা শুরু হলেও বর্তমানে এর কলেবর অনেকদূর পর্যন্ত এগিয়ে গেছে। গাজীপুরের শ্রীপুর এর মাওনা চৌরাস্তায় এর প্রধান কার্যালয়। শুরতে চারজন মালিক থাকলেও পরবর্তিতে ২০১৪ সালে একজন তার শেয়ার বিক্রয় করে চলে যান এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারীতে আরও একজন নতুন মুখ অন্তর্ভূক্ত হন। ২০১১ সালের অক্টোবরে কোম্পানি যাত্রা শুরু করলেও মূলত ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এর কার্যক্রম ভালভাবে শুরু হয়। কোম্পানিটির ডিএলএস রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৭৩ এবং আহকাব সদস্য নম্বর ২৮০।
ভেটসবিডিঃ আপনিতো আগে একটা ব্রিডিং কোম্পানিতে ছিলেন, এখন নিজেই একটা কোম্পানি চালাচ্ছেন, দুটোর মধ্যে মূল্যায়নটা কেমন?
ডাঃ সারোয়ারঃ আমি আগে স্বনামধন্য ফিনিক্স হ্যাচারী লিঃ এ ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের আগষ্ট পর্যন্ত কর্মরত ছিলাম। প্রথমে ব্রীডার ফার্মের ম্যানেজার হয়ে কাজ শুরু কওে একে একে প্রোডাকশন ম্যানেজার, টেকনিক্যাল ম্যানেজার, টেকনিক্যাল এন্ড মার্কেটিং ম্যানেজার হয়ে আমি পদত্যাগ করি আগষ্ট, ২০১৪ এবং সেপ্টেম্বও, ২০১৪ থেকে এই প্রতিষ্ঠানেই টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট হিসাবে কাজ করছি। আমার ডিভিএম পড়ার পেছনে একটা উদ্দেশ্য ছিল। সরকারী চাকুরি করার ইচ্ছা ছিলনা। এই কারনে আমি একটা প্রতিষ্ঠানেই টানা ১১ বছর চাকরি করেছি। সবকিছুর পেছনে উদ্দেশ্য একটাই ছিল আমি আমার সেক্টর এর জন্য একটা কিছু করবো এবং এ কারনেই আমার এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম। আজকে আমি নিজেকে মালিক মনে করিনা, এটার মালিক দেশের মানুষ। আমি আমার প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা হিসাবে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি। আগে যখন চাকরি করতাম তখনকার ভাবনা ছিল কিভাবে মালিক কে খুশি করানো যায়। আর এখন সবসময় মাথায় রাখি কিভাবে আমি আমার কর্মকর্তা কর্মচারিদের ভালো রাখতে পারবো। তবে চাকরি করার চেয়ে অনেক বেশি কঠিন একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা। এটাও ঠিক যে, সবাইকে সাথে নিয়ে এক পতাকাতলে একত্রে হয়ে এগিয়ে চলার চেয়ে বেশী মজা আর কোথাও নাই।
ভেটসবিডিঃ শুরুতে কি কি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে ?
ডাঃ সারোয়ারঃ আমি মনে করি শুরুতে প্রত্যেক কোম্পানি যে ধরনের সমস্যার মোকাবেলা করেছেন আমিও তাই করেছি। তবে প্রোডাক্ট সিলেকশন ছিল আমার প্রথম সমস্যা। আমি প্রথম ২ বৎসর ভালো পন্যের সন্ধানেই ছিলাম। তারপর পেয়ে যাই। মূলত একটা ভালো ম্যানুফেকচারিং কোম্পানি ছাড়া এগিয়ে চলা সম্ভব নয়।
ভেটসবিডিঃ এখন সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
ডাঃ সারোয়ারঃ এখন সম্ভাবনা অনেক ভালো এবং আমার প্রত্যাশার চেয়ে বেশী। তবে আমি খুব ধীরে চল নীতিতে বিশ্বাসী। যতটুকু সম্ভাবনা তার ৫০% এর নিচে থাকার চেষ্টা করছি। সেই অনুযায়ী কাজ করছি। এখন যেভাবে যাচ্ছি এটা চলতে থাকলে আল্লাহর রহমতে ২০২০ সালের মধ্যে একটা সম্মানজনক অবস্থায় পৌঁছাতে পারবো।
ভেটসবিডিঃ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
ডাঃ সারোয়ারঃ ভবিষ্যতে আমি আরও নতুন নতুন এবং ভিন্ন ধর্মী চিন্তা চেতনা নিয়ে কাজ করতে চাই। আমাকে দিয়ে নয় বরং পন্যের নাম ও তার গুণাগুণ দিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি পাবে এমনটাই আশা করছি। অদূর ভবিষ্যতে আমরা পোল্ট্রি, ডেইরী ও মৎস্য খাতের জন্য নতুন নতুন প্রয়োজনীয় ফিড এডিটিভস্, প্রোটিন, নিউট্রিশনাল প্রোডাক্টস্ ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত জরুরী মান সম্মত মেডিসিন আমদানি করে উন্নত সেবা প্রদান করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই। এছাড়াও আমাদের নিজস্ব জমিতে ম্যানুফেকচারিং কারখানা করার পরিকল্পনা আছে।
ভেটসবিডিঃ খামারিদের সাড়া পাচ্ছেন কেমন?
ডাঃ সারোয়ারঃ পন্যের সঠিক মান ও উন্নত সেবাই আমাদের মূল চাবিকাঠি। আর এ কারনেই অতি অল্প সময়ে আমাদের পন্য খামারীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া মিলেছে।খামারীরা পন্য দিয়ে সেইফ বায়ো প্রোডাক্টস্ এর নাম জানতে পারছে।
ভেটসবিডিঃ আপনার কোম্পানির প্রোডাক্টের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত কি?
ডাঃ সারোয়ারঃ সিলেক্টিভ ও অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রোডাক্টের গুণগত মানের কারনে মাঠ ও ইন্সটিটিউট এর সকল বিশেষঞ্জদের মতামত অত্যন্ত ভালো এবং তারা চান আমরা যেন এ ধারা অব্যাহত রাখি।
ভেটসবিডিঃ কোন কোন জেলায় আপনাদের প্রোডাক্ট পাওয়া যাচ্ছে?
ডাঃ সারোয়ারঃ এই মুহুর্ত পর্যন্ত যে সকল জেলায় আমাদের পন্য পাওয়া যায়- ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোর গঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, মানিকগঞ্জ, নরসিংদি, বি.বাড়িয়া, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, কক্সবাজার, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, জিনাইদহ, যশোর, পাবনা, রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ,জয়পুরহাট, রংপুর, লালমনিরহাট।
ভেটসবিডিঃ প্রতিযোগীদের তুলনায় আপনার কোম্পানির প্রোডাক্টের বিশেষত্ব কি?
ডাঃ সারোয়ারঃ প্রতিযোগীদের তুলনায় আমার বেশকিছু প্রোডাক্টস্ এর ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- গরমের জন্য ইলেকেট্রা সি, সেইফ ইমিউনো গার্ড, কুইক গ্রোথ-৩৫, অর্গ্যাক্যাল পি, সেইফ জাইম, একটোকিল, অ্যালবেন্ডাজল, ইউরো নর্ম, ডক্সিসাইক্লিনা প্লাস, টাভেট জি.এস.টি এর উপাদান গত ও কার্যকারিতার দিক থেকে একেবারেই আলাদা এবং এই জাতীয় পন্যের মাঝে আমরাই এগিয়ে আছি।
ভেটসবিডিঃ কাস্টমার সাপোর্ট দিচ্ছেন কি?
ডাঃ সারোয়ারঃ কাষ্টমার সাপোর্টের সাথে আমি নিজেই জড়িত। এর পরেও মাঠ পর্যায়ে আমাদের সভা – সেমিনার, ঘরোয়া মিটিং এর জন্য আমরা একজন অভিজ্ঞ সম্পন্ন ভেটেরিনারিয়ান টেকনিক্যাল এন্ড সেলস্ ম্যানেজার হিসাবে দায়ীত্ব পালন করছেন।
ভেটসবিডিঃ আপনাকে ধন্যবাদ।
ডাঃ সারোয়ারঃ ভেটসবিডি’র মাধ্যমে সবল পাঠককেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কোম্পানি বা কোন প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে আমার সাথে যোগাযোগ করতে safebio2011@gmail.com এই মেইল এড্রেসটি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা লগ অন করতে পারেন http://sbpl-bd.com ঠিকানায়।
Jante chai all produce somonde.