মুরগি মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণির মতোই টক, ঝাঁল, মিষ্টি ও তেঁতোর স্বাদ উপলদ্ধি করতে পারে কি পারে না এই নিয়ে সারা দুনিয়ার মতো আমাদের দেশেও প্রাণি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চলছে বিতর্ক। এক গ্রুপ বলছে বুঝতে পারে না অন্য গ্রুপ বলছে বুঝতে পারে। অতি সম্প্রতি আমাদের দেশের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এই বিষয়টি নিয়ে মুখরোচক তর্কে জড়িয়ে পড়লে গল্পস্থল থেকে একজন আমাকে ফোন করলে আমিও না থাকার পক্ষে মত দিই। তবে আমি এটাও বলি যে বিজ্ঞানীরা নতুন করে কোন গবেষনা করে থাকলে আমার এ মত বিপক্ষেও যেতে পারে। আমি সেই মুহূর্তে ডাঃ কামরুজ্জামান সাহেব কে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনিও প্রথমে না থাকার কথাই বলেন। কিন্তু যখন আমি বললাম সম্প্রতি কোন তথ্য আছে কি না যাতে বলা যায় মুরগিতে টেস্ট বাড আছে। উনি সাথে সাথে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েই পেয়ে গেলেন এই সংক্রান্ত চমকপ্রদ এক গবেষনার খবর এবং সেই মুহুর্তে আমরা উভয়ই একমত হয়ে সেই দিনের সেই বিতর্কের অবসান করা হয়। আজকের এই লেখার মাধ্যমে আমি সকলকে এই মেসেজটিই দিব যে মুরগিও মানুষের মতোই টক, ঝাঁল, মিষ্টি ও তেঁতোর স্বাদ উপলদ্ধি করতে পারে। এটা এখন আর বিতর্কের কোন বিষয় নয়।
যদিও ১৯০৬ সালে প্রথম একদল গবেষক মুরগির জিহ্বাতে ৬০-৭০ টি টেস্ট বাডের কথা বলেছিলেন কিন্তু ১৯৫০ সাল পর্যন্ত এর সত্যতা নিশ্চিৎ করা যায়নি। সম্প্রতি আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এবং তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়, ইসরাইল এর এনাটমি ও এন্থ্রপলজি বিভাগের গবেষকগণ নিশ্চিৎ হন যে মুরগির জিহ্বাতে টেস্ট বাড বিদ্যমান অর্থাৎ এরা টক, ঝাঁল, মিষ্টি ও তেঁতোর স্বাদ উপলদ্ধি করতে পারে। তবে মুরগির এই টেস্ট বাড অন্যান্য প্রাণির মতো নয়। আছে অবস্থান গত পার্থক্যও। মানুষের ৯,০০০ টি, গরুর ২৫,০০০ টি, শুকরের ১৫,০০০ টি থাকলেও মুরগির জিহ্বায় আছে মাত্র ২৪ টি। সংখ্যায় গুটি কয়েক হলেও এদের সংবেদনশীলতা অনেক বেশী। এগুলোর অবস্থান হলো জিহ্বা মূলে, ফেরিংক্স এর মেঝেতে এবং মাত্র ২-৪% হলো জিহ্বার মাঝ খানে।
এই ছবিতে সাদা সাদা অংশ গুলোই হলো টেস্ট বাড।
এই টেস্ট বাড থাকার কারনেই মুরগি খাদ্যের চেয়ে পানি বেশী পছন্দ করে। আবার হালকা এসিড যুক্ত গরম পানির চেয়ে হালকা ঠান্ডা পানি বেশী পছন্দ করে। অন্য দিকে অতি মাত্রায় মিষ্টি যুক্ত খাবার ও পানিয় যেমন- স্যাকারিন, মধু ও স্ট্রবেরির প্রতি আগ্রহ কম দেখায়। তবে সামান্য মিষ্টি যুক্ত পানি ও খাবার বেশী খেতে চায়। অধিক মাত্রায় তেঁতোযুক্ত খাবার ও পানি কম গ্রহন করে। যেমন- সকল ধরনের এন্টিবায়োটিক, সালফার জাতীয় ঔষধ, টাইলোসিন, টিয়ামুলিন, টিলমাইকোসিন, কিছু কিছু কৃমিনাশক ও কক্সিডিয়ার ঔষধ তেঁতো স্বাদ যুক্ত হয়। তাই অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া এই সকল ঔষধ ব্যবহার না করাই উত্তম। এই ঔষধগুলো ব্যবহারের সময় চিনি/গুড় ব্যবহার করলে ভাল হয়। আবার কোন কারনে খাদ্যে অরুচি হলে সামান্য টক/এসিডিয় অথবা মিষ্টি যেমন চিনি/গুড়, অ্যাপেটাইজার মিশ্রিত খাবার ও পানি ব্যবহার করলে খাদ্য গ্রহন বাড়ানো সম্ভব। এই সকল অসুবিধার কথা চিন্তা করে বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন ঔষধ যেমন নেচারাল এন্টিবায়োটিক যেমন- ফাইটোবায়োটিক নামে উদ্ভিদজাত নেচারাল এন্টিবায়োটিক তৈরী করছেন যেগুলি প্রাণি ও মানুষের উভয়ের জন্যই মঙ্গল জনক।
জোস আর্টিকেল লিখেছেন বস্। দীর্ঘদিনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর হয়ে গেল এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। আপনার প্রতি তাই অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা। আশা করি আমার মতো অনেক ভেটেরিনারিয়ানেরই এই তথ্যটা কাজে লাগবে। A+++++++… 🙂
ধন্যবাদ ডা সরোয়ার জাহান ভাই। ৩/৪ দিন থেকে আপনার লিখা গোলা নেট এ খুজে খুজে পড়ছি। অনেক অজানা বিষয় জানা হচ্ছে। আপনার আরও গবেষণা ধর্মী আর্টিকেল পড়ার অপেক্কায় আছি।
Khub Chamatkar ekti article hoyese Sorwar bhai. A A++
সারোয়ার ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম একটি “উভয় সংকট” সমস্যার সমাধান দেয়ার জন্যে। এতথ্যগুলি আমরা পাবার কথা আমাদের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ কিংবা গবেষকদের কাছ থেকে । তাঁরাতো ভেটসবিডি ভিজিট করার সময় পান না (ব্যতিক্রম কেবল নাজমুল হোসাইন নাজির ভাই)। বাংলাদেশের শিক্ষকবৃন্দ শুধুই একাডেমিশিয়ান আর গবেষকেরা যে গবেষণা করে তা এমএস থিসিস-এর চেয়ে খারাপ নাহলেও, বড়জোড় সমান। আপনাকে আমরা “ভেট’স ভেনগার্ড” বলতে পারি।
মইন তোমাকে ধন্যবাদ। আসলে স্যারেরা সময় পান না তো তাই। আর আমাকে বিষেশায়ীত কোরোনা। নোবেল জয়ী ভেটেরিনারিয়ান এর খোজ তো তোমার জন্যই পেলাম। কোনদিন স্যারদের মুখে শুনিনি। কাজেই আমরা যারা মাঠে আছি, সবাই মিলে নিজেদের সমৃদ্ধ করি।
“Lindenmaier and Kare (1959) described a small number of taste buds in the epithelium at the base of the tongue caudal to the papillae.“ Getty, R. (1975) Aves digestive system: Sisson and Grossman`s The Anatomy of Domestic animals. Volume 2. page 1861.——-Thanks friend Sorwar for your writing. @@ moin plesae try to think before sending any commend on public post.
আপনাকেও ধন্যবাদ। এটাকে বিশেষায়িত না বলে ভালবাসার বহি:প্রকাশ বলতে পারেন। তবে আপনার স্পিরিট আমি ধরতে পেরেছি। আপনার কলম আরও নতুন নতুন মাস্টার পিস-এর জন্ম দেবে সে প্রতীক্ষায় রইলাম। চালিয়ে যান।
Thanks for your informative writing…… go ahead
Dear Friend
Thanks for your article though i have not much interest on this issue but i appreciate you for your inspiration.
কেন কোন আগ্রহ নেই এই বিষয়ে? আপনি মুরগি/পাখী নিয়ে কাজ করেন না তাই? এই বিষয়ে কাজ না করলেও ডাঃ হিসাবে জানার দরকার নাই কি?
Thank u doctor. It was questionable to me upto yesterday. actually yesterday i collect information abt it from internet . Thank u so much…….go ahead