প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের কারাদণ্ড

দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে ছাগল উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ছাগলের শেড নির্মাণ প্রকল্পে অতিরিক্ত বিল প্রদান ও গ্রহণের দায়ে তৎকালীন পশু সম্পদ অধিদপ্তর (বর্তমান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর) এর সাবেক এক কর্মকর্তাসহ দুজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড, ১১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো চার মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন পশু সম্পদ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (চাকরিচ্যুত) মো. আলী আকবর ও মেসার্স ডাবি ডাব্লিও জেড এন্টারপ্রাইজের মালিক ঠিকাদার ওয়াহিদুজ্জামান। সূত্রঃ দৈনিক আজাদী


গত ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এই রায় প্রদান করেন।এ সময় দুজনই কাটগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে আপীলের শর্তে তাদের এক মাসের জামিন মঞ্জুর করা হয়। দুদক পিপি মাহমুদুল হক দৈনিক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেছেন। উক্ত মামলায় পশু সম্পদ অধিদপ্তরের দারিদ্র বিমোচনে ছাগল উন্নয়ন কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম কো–অর্ডিনেটর ডা. আলেক মন্ডলও আসামি ছিলেন। মৃত্যুজনিত কারণে তাকে খালাস প্রদান করা হয়। দুদক পিপি জানান, আসামিরা ৫ ইউনিট ছাগলের শেড নির্মাণে ১৬ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৮ টাকার কাজ না করেও, করেছেন মর্মে ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে পরস্পর যোগসাজসে উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আদালতসূত্রে পত্রিকাটি জানায়, মামলার এজাহারে দারিদ্র বিমোচনে ছাগল উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় হাটহাজারী উপজেলায় নতুন ছাগল উন্নয়ন খামারে ৫ ইউনিট ছাগলের শেড নির্মাণের জন্য ৬১ লাখ ১৩ হাজার ৫৩১ টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র দাখিল করে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ঢাকার মেসার্স ডাব্লিও জেড এন্টারপ্রাইজ ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৯১০ টাকা দর দাখিল করে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে ডা. মো. আলেক মন্ডল কার্যাদেশ প্রদান করেন। ২০০৭ সালের ২৮ অক্টোবর ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়। সর্বমোট পরিশোধিত বিলের পরিমাণ দেখা যায় ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৮২২ টাকা। এজাহারে আরো বলা হয়, ২০০৯ সালের ৪ জানুয়ারি গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী দ্বারা ৫ ইউনিট ছাগলের শেড নির্মাণ কাজের পরিমাপ গ্রহণ করে নির্মাণ ব্যয় নিরূপন করা হয়। গৃহিত পরিমাপ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ছাগলের শেড নির্মাণে প্রদত্ত বিলে পরিমাপকৃত মূল্য অপেক্ষা ঠিকাদার ওয়াহিদুজ্জামানকে ১৬ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৮ টাকা অতিরিক্ত বিল প্রদান করা হয়েছে। যা দন্ড বিধির ৪০৯/৪৭৭ (ক)/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ২০০৯ সালের ২৯ জুন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক অজয় কুমার সাহা দণ্ডপ্রাপ্ত ও খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। এরপর তদন্ত শেষ করে পরের বছরের ১১ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরই ধারাবাহিকতায় চার্জগঠন করে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।

লেখকঃ ডাঃ তায়ফুর রহমান

ডাঃ তায়ফুর রহমান; ডিভিএম, এম এস, এমপিএইচ ; ন্যাশনাল টেকনিক্যাল এডভাইজার-এপিডেমিওলজি, জাতিসঙ্ঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা, ঢাকা; ব্লগ এডমিনিষ্ট্রেটর, ভেটসবিডি

এটাও দেখতে পারেন

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুঃ জানা যাবে স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ পশু নিবন্ধিত হবে যা গ্রাহকদের পশুগুলোর স্বাস্থ্য ইতিহাস দেখার সুযোগ দিবে। প্রথমবারের মতো, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.