বিভিএ নির্বাচন ২০১৭-২০১৮ ‘এর ডা. নজরুল-ড. হাবিব মোল্লা প্যানেল থেকে যুগ্ম মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ডা. বিশ্বজিৎ রায়। যেহেতু অনেক দিন ধরেই বেসরকারি খাতে কর্মরত আছেন এবং ভেটেরিনারিয়ানদের একটা বড় অংশ বেসরকারি পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন, তাই এ বিষয়ে এবং সেই সাথে নির্বাচন বিষয়েও আমরা কথা বলেছিলাম তাঁর সাথে। কথোপকথনটি ছিলো এরকমঃ
ভেটসবিডি: প্রথমে আমি আপনার কাছ থেকে জানতে চাইবো, আপনি নিজেকে কেন প্রার্থী হিসেবে যোগ্য মনে করেন?
ডা. বিশ্বজিৎ: এখন এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সর্বমোট ভেটেরিনারিয়ান এর কথা চিন্তা করি DLS এর বর্তমান লাইভস্টক সার্ভিস এর যে অর্গানোগ্রাম সেটিই অনেক পুরনো এই অর্গানোগ্রাম এর মাধ্যমে খুব বেশি ভেটেরিনারিয়ান নিয়োগ করা যাবে না ..Most of the ভেটেরিনারিয়ান এখন যারা পাশ করে বের হচ্ছে যদিও সরকার তাদেরকে তৈরি করছে.. কিন্তু ও সরকারের যেহেতু proper কোন planning নেই , কতটুকু তার need, কতটুকু production করতে হবে, সেই কারণে অনেক ভেটেরিনারিয়ান নিজ নিজ কারণে প্রাইভেট সেক্টরে absorb হয়ে গেছে… প্রাইভেট সেক্টরের প্রত্যেকটা stack হোল্ড করে অনেক ভেটেরিনারিয়ান.. আমি যেহেতু আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে আমার চাকরি জীবন শুরু করেছি প্রাইভেট সেক্টরে … তাই আমি প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে কি সুবিধা ও অসুবিধা আছে সেই সেইগুলো জানি এবং কোন লেভেলে কাজ করতে হবে সেটিও আমি জানি.. যদিও আমি প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করি অামাকে তারপরও সরকারের সাথে ওতপ্রোতভাবে কাজ করতে হয়.. সবকিছু মিলিয়ে এই সর্বমোট ১৭ বছরের চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা অভিজ্ঞতা, টেকনিকেল অভিজ্ঞতা চিন্তা করে আমি এই যুগ্ম মহাসচিব পদের জন্য যোগ্য বলে মনে করছি।
ভেটসবিডি: প্রাইভেট সেক্টরে আমাদের ভেটেরিনারিয়ানদের নানারকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় যেমন বলে থাকে যে, অমুক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে ব্যাগ টানতে হয়. অর্থাৎ তারা মনে করে যে সরকারি সেক্টরে যে মর্যাদা পাওয়া যায়, বেসরকারি সেক্টরে সে মর্যাদাটা পাওয়া যায় না
ডা. বিশ্বজিৎ: ভেটেরিনারিয়ানরা প্রাইভেট সেক্টরে ocupid হয়েছে আসলে একজন ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে শুধু কাজ করবে, আমার মনে হয় সেরকম হয়নি, আসলে private sector অত্যন্ত competitive একটা সেন্টার অর্থাৎ প্রতিদিনের একটা নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে চলতে হয় অর্থাৎ একজন প্রাইভেট সেক্টরে তখনই employeed হবেন যখন তার যা বেতন ধরা হবে তার বিপরীতে অন্তত ৫ থেকে ১০গুণ return দিতে পারবে… তাকেই Private sector ভালো ভাবে গ্রহণ করবে.. তাছাড়া যারা ট্রেডিশনাল চিন্তাভাবনা করে তাদের কাউকে private sector গ্রহণ করবে না.. যেমন এনজিও, feed sector, ফার্মাসিটিক্যালস, যেকোনো ধরনের sales এ Investment vs return বিষয়টা সবসময়ই চিন্তা করে প্রত্যেকটা private sector এই কাজটা করে.. সেখানে ভেটেরিনারিয়ানদের আসলে ঐরকম ভাবে উপযুক্ত পদ সৃষ্টি হয়নি… অনেক প্রাইভেট সেক্টরে, কোম্পানিতে ভেটেরিনারিয়ানরা উপযুক্ত পদে আছে… কিন্তু এই জায়গাতেও ভেটেরিনারিয়ানদের কিছু স্বল্পতা আছে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ব্যাগ টানার যে পয়েন্ট, সেটা হচ্ছে একটা সময় ছিল যখন private sector থেকে মোট ভেটেরিনারিয়ানদের তুলনায় খামারিদের সংখ্যা অনেক বেশী ছিল.. প্রত্যেকটা জায়গায় খামারিরা এত বেশি জানত, যে তাদের আর নতুন করে ডাক্তার ডাকার প্রয়োজন হতো না… যার কারনে খামারিরাও এতদিন reluctant ছিল কিন্তু আমরা যখন প্রাইভেট সেক্টরে আসলাম, খামারীরা আস্তে আস্তে পরে ডাক্তারদের প্রয়োজনের কথা এবং তাদের জানার স্বল্পতার কথা বুঝতে পারল … এখন একটা পরিবর্তন এসেছে… খামারের মধ্যে এখন ডাক্তার ছাড়া অন্য কোন non technical পার্সন কে খামারে ঢুকতে দেয় না.. এটা কিন্তু আমাদের অনেক বড় একটা অর্জন এবং অনেকদিন ধরে কাজ করার ফলে আমাদের প্রয়োজনীয়তা খামারীদেরকে উপলব্ধি করাতে পেরেছি..একেবারে খামার পর্যায়ে ভেটেরিনারিয়ানদের প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে পেরেছি… এটা বুঝাতে পেরেছি ভেটেরিনারিয়ান ছাড়া খামার চালানো অসম্ভব.. আর এই পরিবর্তনটা আসতে হলে যে process গুলোর মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে তার একটা পর্যায়ে ব্যাগ টানানো issue চলে আসছে .. এখন আর ওই অবস্থা নেই..
ভেটসবিডি: Product development এবং রিসার্চ, এখানে ভেটেরিনারিয়ানদের কাজ করার সুযোগ আছে, এই জায়গাটার সম্প্রসারণে আপনার কোন উদ্যোগ থাকবে কিনা..
ডা. বিশ্বজিৎ: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা এখন develop দেশে পরিণত হইনি, আমরা এখনো Developing country… যার কারনে product development এবং রিসার্চ বলতে যা বুঝি, সেরকম truly development and research নিয়ে কিছু হয়না বাংলাদেশ…যা কিছু হয়, বাইরে থেকে research and development করা Product আমরা নিয়ে আসি এবং বাংলাদেশে market করি… এবং এটা আসলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদেরকে সাপোর্ট করেনা, এটা সত্যি, কারণ রিসার্চ করতে গেলে একটা অন্ধকারের পিছনে বড় রকমের ইনভেস্টমেন্টের ব্যাপার থাকে যার ফলাফল শূন্যও হতে পারে…
সুতরাং প্রাথমিকভাবে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ওই অবস্থায়… এটা সত্যি যে এই অবস্থাটা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে, আমরা product development করে, রিসার্চ করে মার্কেটে দেয়ার scope নাই.. এ জায়গায় ভেটেরিনারিয়ানদের কাজ করার জায়গাটা কম। তবে এই product গুলো বাজারে কোন জায়গায় সেট করতে হবে, সেই জায়গাগুলোতে ভেটেরিনারিয়ানদের কাজ করার সুযোগ আছে এবং সেই কাজটা শুরু করেছে রেনেটা… বিশেষ করে বলবো আমি, আমি নিজে এ জায়গাটায় অনেক contribute করেছি.. কারন আমি রেনেটা তে জয়েন করার আগে যে ছিলো, সে বিবিএ- এমবিএ… পরে আমি বুঝাতে সক্ষম হয়েছি, বিবিএ এমবিএ’র কোন প্রয়োজনীয়তা নাই এই জায়গাটাতে। জায়গাটা মার্কেটিংয়ের হলেও এটি আসলে Technical marketing.. সুতরাং এই জায়গাটাতে শুধুমাত্র marketing জ্ঞান… এখানে technical marketing জ্ঞানের প্রয়োগ আছে বিধায় ভেটেরিনারিয়ানদের এখানে খুবই প্রয়োজন …. আমার সাথে যারা মেম্বার হিসেবে আছেন তারা প্রত্যেকেই ভেটেরিনারিয়ান…. marketing লাইনে কাজ করতেছে… ..আমাদের কোম্পানীর এ প্রচলন পরবর্তীতে অন্যান্য প্রাইভেট কম্পানীতে replicate হয়েছে… এটাও সত্যি, রেনাটা এক নাম্বার position ধরে রাখছে তার কারণ, রেনেটার যে মার্কেটিং টিম কাজ করছে, তারা খুব strong মার্কেটিং টিম, এর কারনে, মার্কেটিং এর জায়গায় ভেটেরিনারিয়ানদের অনেক সুযোগ আছে … এবং এই সুযোগ, এই অবস্থাটা আমার মাধ্যমে সৃষ্টি।
ভেটসবিডি: কেউ কেউ বলে থাকেন, বিশেষ করে প্রাইভেট সেক্টরে যেসকল ভেটেরিনারিয়ান যারা technical service দেন তাদের প্রমোশনটা কিভাবে হবে …একটা ভবিষ্যতে তাদের position কী দাঁড়াবে… যেহেতু এরা sales organization, সেহেতু তারা sales কে প্রাধান্য দিবে, কিন্তু যারা technical service-এ জব করেন তাদের পদোন্নতির ব্যাপারটা কিভাবে হবে, এই জায়গায় আপনার ভূমিকা ভূমিকা কী হতে পারে?
ডা. বিশ্বজিৎ: বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোতে রেনাটা অনেক পরে technical service চালু করে…যারা যারা technical services section খুলেছিল তারা ভেটেরিনারিয়ানদের development লাইন কি হবে, তারা properly নির্ধারণ করতে পারেনি, কিন্তু আমরা Technical development লাইনটা ঠিক করেছি এবং সেই অনুযায়ী তাদের development হবে এবং তা হবে কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী।
ভেটসবিডি: অনেকে গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড’র কথা বলে থাকেন…
ডা. বিশ্বজিৎ: রেনাটা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি, ফাইজার কোম্পানির মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল… তখন থেকেই gratuity ইত্যাদি দেওয়া হয়ে থাকে.. অনেক কোম্পানিই এসব সুযোগ-সুবিধা দেন, যেসব কোম্পানি দেন না, আশা করছি, খুব দ্রুতই তারা এসব সুযোগ সুবিধা চালু করবে…
ভেটসবিডি: ভোটারদের কাছে আপনার কিছু বলবার আছে কিনা?
ডা. বিশ্বজিৎ: ভোটারদের প্রতি আমার চাওয়া হল, আমরা যে কজন ডা. এসএম নজরুল ইসলাম – ড. হাবিবুর রহমান মোল্লা প্যানেলে নির্বাচন করছি, আমাদেরকে আপনারা দুই বছরের জন্য সুযোগ দিন এবং আমরা কাজ করলে আপনারা পরিবর্তনটা আস্তে আস্তে উপলব্ধি করতে পারবেন, কারন সব সেক্টরেই আমাদের এই লোকগুলির সবরকম কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে … আমি ব্যক্তিগতভাবে যে জিনিসটা বলবো, private company তে চাকরি করার পরও আমার কাছে মনে হলো, দেশকে, পেশাকে দেওয়ার মত কিছু করা দরকার… ২০০৭ সালে আমিই প্রথম বলেছিলাম World Veterinary Day পালন করা দরকার এবং তখন থেকেই আমরা The Vet Executive এর ব্যানারে এই দিবসটা পালন করা হয়ে আসছিল। এবারই প্রথম World Veterinary Day পালন করা হলো ডিএলএস এবং The Vet Executive এর যৌথ উদ্যোগে। গত চার বছর আগে আমরা The Vet Executive Honor চালু করি, এবং এর মাধ্যমে আমরা ডা. মনজুর আজিজ তারা স্যার, ড. মানিক লাল দেওয়ান, ড. জিয়া উদ্দিন আহমেদ এবং ড. আবদুর রহমান স্যারকে সম্মানিত করতে পেরেছি । The Vet Executive এর পরিসর অনেক ছোট। তারপরও আমরা এই ছোট ছোট কাজগুলো করতে পেরেছি। তবে বিভিএর একটা অনেক বড় পরিসর, আশা করছি, এর মাধ্যমে আমরা আরও বেশি অবদান রাখতে পারবো। সম্মানিত ভোটারদের কাছে আমি এটুকুই বলতে চাই।
ভেটসবিডি: আপনাকে ধন্যবাদ
ডা.বিশ্বজিৎঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।