বাংলাদেশের অতি পরিচিত পাখি ঘুঘু। আমাদের দেশে এই
পাখি এখন গ্রামাঞ্চলেই দেখা যায়। ঘুঘু
পাখি উড়তে পারে বেশ দ্রুত। লোকালয়ের কাছে বসবাস
করলেও এরা আড়ালে থাকে। নিজেদের বাসা নিজেরাই
তৈরি করতে পারে। ঘুঘু পাখি খুব সুন্দর
সুরেলা কণ্ঠে ডাকতে পারে।
অনেক শিকারি ছোট খাঁচায় একটি ঘুঘু
পাখি রেখে কোনো ঝোপে খাঁচাটি ফাঁদ
পেতে লুকিয়ে রাখে। খাঁচার ঘুঘু
সুরেলা কণ্ঠে ডাকতে থাকে। সেই ডাক শুনে বনের ঘুঘু
ফাঁদপাতা খাঁচায় ঢুকে আটকে যায়। এভাবে শিকারি ঘুঘু ধরে।
বর্তমানে পাখি আইনে এটা দণ্ডনীয়।
ঘুঘু পাখি দেখতে প্রায় কবুতরের মতো। এরা প্রায় ৩০ থেকে ৪২
সেঃমিঃ লম্বা হয়। ঘুঘু পাখির লেজ বেশ লম্বা।
কোনো কোনোটির ডানায় ও লেজে কালো রং ও স্পষ্ট
২টি হলুদ ডোড়া দাগ রয়েছে। আবার কোনো কোনোটির
লেজের নিচের রং হয় দারুচিনির মতো। ঘুঘুর দেহ
ফ্যাকাসে ধূসর, বাদামি ও তামাটে রংয়ের হয়।
ঘাড়ে বেগুনি প্রলেপ রয়েছে। ঠোঁট বাদামি ও কালো। এদের
প্রধান খাদ্য শষ্যদানা। এছাড়াও খাদ্য তালিকায়
রয়েছে বিভিন্ন রকম ফল, বীজ ও গাছের কচিকুঁড়ি। পিঁপড়া ও
কীট-পতঙ্গও খেয়ে থাকে।
আদিকাল থেকেই অনেকে শখের বসে ঘুঘু পালন করেন। এই
পাখি ২টি করে ডিম পাড়ে। ডিমের রং সাদা ও
কিছুটা ফ্যাকাসে। ডিম লম্বায় ২.৬ সেঃ মিঃ ও প্রস্থে ১.৫
সেঃ মিঃ। পুরুষ ও স্ত্রী দুজন মিলেই ডিমে তা দিয়ে থাকে।
এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজননের সময়। ডিম
থেকে বাচ্চা ফুটতে সময় লাগে ১৩ থেকে ১৪ দিন।
পৃথিবীতে ঘুঘুর প্রজাতি রয়েছে ৩৬টি।
বাংলাদেশে পাওয়া যায় ৬টি প্রজাতি। আফ্রিকা, ইউরোপ,
ভারতীয় উপমহাদেশে এই পাখির দেখা পাওয়া যায়।
খারাপ লোক যাতে শিকার করে ঘুঘুর প্রজাতি বিলুপ্ত
করতে না পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
বিদেশি জাতের ঘুঘু ‘গ্রে ডায়মন্ড ডাভ’
ছোট আকারের অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু। ওজন ২৩ থেকে ৩২ গ্রাম।
লম্বায় ১৯৩ থেকে ২১৩ মিলিমিটার। শিশু অবস্থায় এর গায়ের
রং ধূসর। পূর্ণ বয়স্ক হলে ডানার রং সাদা হয়। চোখ
জুড়ে কমলা রংয়ের বৃত্ত তৈরি হয়।
একটি পূর্ণ বয়স্ক ঘুঘু যখন ডিম উৎপাদনে উপযোগী হয় তখন চোখের
বৃত্ত ছোট হয়। ধূসর বর্ণের পুরুষ ঘুঘুর চোখের বৃত্তের রং হয়
কমলা অথবা লাল। পরিধি ২-৩ মিলিমিটার পর্যন্ত। স্ত্রী ঘুঘুর
রং বাদামি ধূসর রংয়ের, চোখের বৃত্ত ১ মিলিমিটার পর্যন্ত পুরু
হয়।
এই ঘুঘু সাধারণত ১০ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত বাঁচে। অনেক
ক্ষেত্রে ২১ বছর পর্যন্তও টিকে থাকে। ৬ মাস বয়স হলেই ডিম
পাড়া শুরু করে। কখনও কখনও এর ব্যতিক্রম হয়ে ৮ মাস লেগে যায়।
এরা যখন ডাকবে তখন আপনাকে গ্রামের পরিবেশের
কথা মনে করিয়ে দেবে।
গ্রে ডায়মন্ড ঘুঘুর ডিমের রং সাদা। ২টি মাত্র ডিম দেয়। সব
শ্রেণির ঘুঘুর ডিম ফুটে বাচ্চা হতে ১৩ থেকে ১৪ দিন সময়
লাগে। পালন পদ্ধতি
গ্রে ও সিলভার ডায়মন্ড ঘুঘু সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার
আবহাওয়ার উপযোগী। বর্তমানে বাংলাদেশে এই
পাখি পালন হচ্ছে। প্রশিক্ষণের তেমন প্রয়োজন নেই। পাখির
দোকান থেকে একটি খাঁচা সংগ্রহ করলেই হবে। খাঁচার দাম
পড়বে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। খাবারের পাত্র ২০ টাকা।
পানির পাত্র ১৫ টাকা। ডিম পাড়ার পাত্র ৩০ টাকা।
তবে ডিম পাড়ার পাত্র হিসাবে বাঁশ বা প্লাটিকের ঝুড়িও
ব্যবহার করতে পারেন।
ঝুড়িটি খাঁচার এক কোণে ঝুলিয়ে রাখবেন। এর মধ্যে গাছের
ছোট শুকনো ডাল, পাতা ও খড় দিয়ে দিতে পারেন।
তাছাড়া পাটের
বস্তা বৃত্তাকারে কেটে পাত্রে বসিয়ে দেওয়া যায়। একটু
যত্ন নিলে দেখবেন শখের ঘুঘু
আপনাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছে।
শখের জন্য এক জোড়া গ্রে বা সিলভার ডায়মন্ড ঘুঘু দিয়ে শুরু
করতে পারেন। আর বাণিজ্যিকভিত্তিতে সাধ্য মতো এক
সঙ্গে কয়েক জোড়া ঘুঘু দিয়ে শুরু করলে ভালো। বাসার
বারান্দায় বা ছাদের কোণায় অল্প জায়গাতেই এই
পাখি পালন সম্ভব।
খাবার
ঘুঘুর খাদ্য সাধারণত বীজদানা। পিঁপড়াও এরা খেয়ে থাকে।
খাওয়ার জন্য সব সময় পানি দিয়ে রাখতে হয়। পাখির
খাবারের দোকানে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়
খাবার পাওয়া যাবে। ছোট আকারের গম (জিরা গম), চিনা,
কাওন ও ছোট বীজদানা একসঙ্গে মিশ্রণ
করে খাওয়ানো ভালো।
গ্রিট প্রতি প্যাকেট ২০ টাকা ও মিনারেল ব্লক ৩০ টাকায়
পাওয়া যায়। এগুলো খাওয়ানো ডিম ও বাচ্চা উৎপাদনের জন্য
বেশ ভালো।
রোগ
এদের রোগ-বালাই কম। সাধারণত ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
এক্ষেত্রে ঠাণ্ডা প্রতিরোধক ট্যাবলেট বা সিরাপ
পানিতে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।
তাছাড়া লাইট বা বাল্ব জ্বালিয়ে রাখলে এ রোগ
থেকে রক্ষা করা যায়।
এটাও দেখতে পারেন
Problems & solutions of layer birds when climate change from Cold to hot and during hot climate
In this period each bird eats more feed 120-125 gm per day for maintain body …
Vetsbd Livestock related only Bangla blog