মুরগীর খামারে উৎপাদিত দ্রব্যাদির মধ্যে ডিমের ন্যায় স্বাস্থ্যসম্মত আর সুবিধাজনক ভাবে বাজারজাত করার মত সম্ভবতঃ আর কোন উৎপাদ নেই। তথাপি ডিম বাজারজাত করতে গিয়ে অনেকে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়। ফলে খামারী ডিমের সঠিক ও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়।
বংশগত কারণে কিছু জাত ও বর্ণের মুরগী মোটা খোলস এবং কোন কোন জাতের মুরগী পাতলা খোলসযুত্ত ডিম পাড়ে। ডিম উৎপাদনের প্রথম দিকে ডিমের খোলস তুলনামূলকভাবে মোটা থাকে এবং শেষের দিকে ডিমের আকার বড় হয় কিন্তু খোলস পাতলা হয়। এ ছাড়া আবহাওয়ার তাপমাত্রা বাড়লে, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের অনুপাত ঠিক না থাকলে, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের সাথে ভিটামিন ডি না থাকলে ডিম সহজেই ভেঙ্গে যায়। ডিমের খোলস উন্নত মানের হলে তা ২.৭-৩.০ কেজি চাপ প্রয়োগ করলে ভেঙ্গে যায়। নিম্ন মানের খোলস ২.৩ কেজি চাপে ভেঙ্গে যায়।
ডিম তৈরীর প্রক্রিয়া : একেবারে শুরু থেকে ডিম পাড়া পর্যন্ত সমস্ত প্রক্রিয়াটা খুব জটিল এবং দীর্ঘ বর্ণনা সাপেক্ষ। অপরিণত বয়সে মুরগীর একটা ডিম্বাশয়ে ২৯০০ থেকে ৩২০০ ডিম্বাণু থাকে। এর মধ্যে মাত্র ১০-১২ % ডিম্বাণু পরিপক্কতা লাভ করতে পারে যা শেষ পর্যš- ডিমে পরিণত হয়। মুরগীর ডিম উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে হরমোনের প্রভাবে লিভার বা যকৃতের মধ্যে ডিমের কুসুমের উপাদান তৈরী হওয়া শুর” করে এবং রত্তের মাধ্যমে এসে তা ডিম্বাণুর উপর জমতে থাকে। ১-২ দিন পরে অন্য একটি ডিম্বাণু পরিপক্ক হওয়া শুর” করে এবং এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। একটা কুসুম সম্পূর্ণভাবে তৈরী হতে প্রায় ১০ দিন সময় লাগে। ডিম্বাণু পরিপক্ক হওয়ার পর ডিম্বাশয় প্রোজেস্টরন হরমোন (Progesterone hormone) নিঃসৃত করে, এর প্রভাবে মস্তিস্কের সামনের অংশ হতে রিউটিনাইজিং হরমোন নিৎসৃত হয় যা ডিম্বাণুকে ডিম্বাশয় হতে অবমুত্ত করে। এ প্রক্রিয়াকে ওভুলেশন (Ovulation) বলে। মুরগরি প্রথম ওভুলেশন দ্বিতীয় ওভুলেশনকে নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণতঃ প্রথম ডিম পাড়ার ১৫-৪০ মিনিট পরেই দ্বিতীয় ওভুলেশন হয় এবং পরের ওভুলেশনও আগের ডিম পাড়ার ১৫-৪০ মিনিট পরে হয়ে থাকে। মুরগী একটা ডিম পাড়ার ২৩-২৬ ঘন্টা পরে আরেকটা ডিম পাড়ে। যদি দুইটা ডিম পাড়ার মাঝে ২৪ ঘন্টার বেশী পার্থক্য হয় তাহলে পরর্বতী ডিম বিকালের দিকে পাড়বে। এতে যে সমস্ত ডিম বিকালের দিকে পাড়া হয় সেগুলো সকালের দিকে পাড়া ডিমের তুলনায় বেশীক্ষণ ডিম্বনালীতে থাকে।
ডিমের খোসার গঠন সংযুত্তি ও উপাদান:ডিমের বাইরের আবরণ হল ডিমের খোসা (egg shell) যা ডিমের ওজনের ১০-১১% ধারণ করে। গড়পড়তায় প্রতিটি ডিমের খোসার ওজন দাড়ায় ৫ থেকে ৬ গ্রাম যার চমৎকার যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য রযেছে যেমন ভাঙ্গন সহনশীলতা
(breaking strength) যা ৩০ নিউটনের বেশি এবং এটি ৩০০-৩৫০ মিলিমিটার পুরত্ব সম্পন্ন। এ বিশেষ গঠনের কারনে ডিম জীবাণুঘটিত ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে রক্ষা পায় এবং পানি ও গ্যাস বিনিময় নিয়ন্ত্রণ করে। ডিমের খোসায় আনুমানিক ১-৭-২.৫ গ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। গড়পড়তায় ডিমের খোসায় গাঠনিক সংযুত্তি হল:ক্যালসিয়াম কার্বনেট: ৯৪-৯৭%, ফসফরাস :০.৩%, ম্যাগনেসিয়াম: ০.২%, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রণ ও কপার: সামান্য এবং জৈব উপাদান: ২% এর নীচে। জৈব উপাদান এর বেশিরভাগ হল ম্যাট্রিক্স প্রোটিন (প্রোটিন ও পলিস্যাকারাইড এর মিশ্রন) এবং কিছু রঞ্জক পর্দাথ। ডিমের খোসার গঠন নির্ধারনে ও ক্যালসিয়াম কার্বনেট এর আত্তীকরনে এটি মুল ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। ডিমের খোসায় প্রায় ৮০০০ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ছিদ্র আছে।
Reference: 1) Maintaining egg shell quality by Dr Lokesh Gupta, Regional Technical manager, Avitech 2) Research on eggshell structure and quality by P Hunton, World poultry science association 3) Eggshell defects and Dietary essentials , Neospark.
আচ্ছালামুয়ালাইকুম, আমি খামার বিষয়ে একেবারেই নতুন, তাই trial হিসেবে পাশের একটি খামার থেকে ২০টি লেয়ার মুরগী (brown) কিনেছি প্রায় ১ মাস আগে, মুরগীর বয়স এখন আনুমানিক ১০ থেকে ১২ মাস। বাশের মাচার উপরে, ডিম পাড়ার জন্য ৫ টি কাঠের বক্স তৈরি করে দিয়েছি, মুরগী দেখে সুস্থই মনে হচ্ছে, মাঝে একটু ঠাণ্ডা ছিল এখন নেই, খাবার ঠিকই খাচ্ছে। তো এই একমাস ধরে কোন দিন ১০/১২ টির বেশি ডিম দেয়নি, এবং এর ভিতরে ২/৩ টি খোসা ছাড়া, ৩/৪ টি পাতলা খোসা এবং বিভিন্ন রংয়ের। ভেবে ছিলাম একটু বড় পরিসরে খামার করতে কিন্তু এখনতো ভয় পাচ্ছি।
যাইহোক এ অবস্থায় ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এই জটিলতা থেকে সমাধানের জন্য কোন (DRUG) ঔষধ আছে কি? Please help me.