১০০ কোটি মানুষের প্রাণনাশ হতে পারেঃ সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস

আমেরিকার এক গবেষক জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘সোয়াইন ফ্লু’ ভাইরাসের একটি মারাত্মক প্রজাতি তৈরি করেছেন, যা মানবদেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। এ ভাইরাসের কোনো টিকা এখনো বের হয়নি এবং গবেষণাগারের বাইরে এটি ছড়িয়ে পড়লে একশ’ কোটি মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক সোয়াইন ফ্লু’তে এ পর্যন্ত প্রায় চারশ’ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।


২০০৯ সালের ‘সোয়াইন ফ্লু’ ভাইরাস দেহে জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে রদবদল করে নতুন এ ভাইরাস তৈরি করেছেন আমেরিকার ম্যাডিসনের উইসকোনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানি বংশোদ্ভুদ অধ্যাপক ইউশিহিরো কাওয়াকা। তার এ গবেষণার বিষয়ে এখনো কোনো বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু গবেষণার বিষয়টি ফাঁস করে দিয়েছে লন্ডনের দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। এতে ইউশিহিরো কাওয়াকার গবেষণাকে বিতর্কিত এবং কোনো কোনো বিজ্ঞানী এ গবেষণায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মাত্র এক মাস আগে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে ১৯১৮ সালের প্রাণঘাতী ‘স্প্যানিশ ফ্লু’র আদলে ভয়াবহ ভাইরাস তৈরির কথা জানিয়েছিলেন এ বিজ্ঞানী। ১৯১৮ সালের ‘স্প্যানিশ ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়ে আনুমানিক পাঁচ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।

বুনো পাখির দেহের একটি বার্ড ফ্লু ভাইরাসে মিউটেশন বা রূপান্তর ঘটিয়ে স্প্যানিশ ফ্লু’র আদলে নতুন এ ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে। ফলে বাতাসের মাধ্যমে সহজেই প্রাণীদেহে সংক্রমণ ঘটানোর ক্ষমতা পেয়েছে নতুন এ ভাইরাস। সে সময়ে তার এ পরীক্ষাকে নিছক পাগলামি হিসেবে অভিহিত করেছিলেন আতঙ্কিত বিজ্ঞানীরা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মার্ক লিপসটিস মে মাসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত গবেষণাগার থেকে যদি এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বা উদ্দশ্যমূলকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয় তাতে বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ মহামারির প্রকোপ দেখা দেবে। সবচেয়ে নিরাপদ গবেষণাগারেও এ জাতীয় গবেষণা করা উচিত নয় বলে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে ২০১২ সালে মার্কিন সেন্টার ফর আর্মস কন্ট্রোল অ্যান্ড নন-পলিফারেশনের সিনিয়র সায়েন্টিফিক ফেলো লিওন ক্লোৎজ ভাইরাস নিয়ে গবেষণার বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, বিশ্বের ৪২টি প্রতিষ্ঠানে প্রাণঘাতী গুটিবসন্ত, সারস ভাইরাস এবং সোয়াইন ফ্লু’র ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চলছে। ১৩ বছরের মধ্যে অন্তত একবার এ সব গবেষণাগারের কোনো একটি থেকে প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার এ গবেষণা নিবন্ধে জৈব প্রযুক্তি বা জেনেটিকভাবে পরিবর্তিত ভাইরাসের হুমকির আশঙ্কা ধরা হয়নি। কিংবা সন্ত্রাসবাদের আশঙ্কার কথাও এ হিসাবে আনা হয়নি। সব মিলিয়ে ইউশিহিরো কাওয়াকার সৃষ্ট সোয়াইন ফ্লু’র ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কোনোভাবেই খাটো করে দেখা যায় না।

সুএঃ রেডিও তেহরান।

লেখকঃ ডাঃ মোঃ নাহিদ হাসান

DVM, M.S in Pharmacology (BAU) E-mail: nahiddvm788@gmail.com

এটাও দেখতে পারেন

Antibiotics: Handle with care

World Antibiotic Awareness Week during 13-19 November 2017 is being observed globally with the aim …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.