আমার আজকের আর্টিকেলটি মূলতঃ খামারিদের জন্য। খামারি ভাইদের মুখে প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়-“ভ্যাকসিন কাজ করে নাই।” কেন ভ্যাকসিন কাজ করে না বা কি করলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে একটা ধারণা পেতে নিচের পয়েণ্টগুলো দেখুন-
১। সুস্থ বাচ্চাঃ সুস্থ বাচ্চায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল পাওযা যায়। তাই ভ্যাকসিন প্রয়োগের পূর্বে বাচ্চার সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।
২। ভ্যাকসিনেশনের সঠিক সময়সূচী নির্ধারণঃ বাচ্চায় মেটারনাল এন্টিবডির অবস্থা জেনে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে ভালো হয়। তবে এই পরীক্ষা কিছুটা ব্যায়বহুল হওয়ায় আমাদের দেশে সাধারণ খামারীদের জন্য এর সুযোগ কম। তাই একজন দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান বা পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ’র সাথে পরামর্শ করে এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব অনুযায়ী ভ্যাকসিন প্রয়োগের সঠিক সময়সূচী নির্ধারণ করা উচিৎ।
৩। সঠিক ভ্যাকসিন নির্বাচনঃ রোগ ও বাচ্চার বয়স অনুযায়ী সঠিক স্ট্রেইনের ভ্যাকসিন নির্বাচন করতে হবে।
৪। সঠিক নিয়ম মেনে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করাঃ সর্বক্ষেত্রে সঠিক তাপমাত্রা (cool chain) নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। লাইভ ভ্যাকসিন ৭০ সে. এর নিচে এবং কিল্ড ভ্যাকসিন ২০ থেকে ৭০ সে. তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। ডায়লুয়েণ্ট বা ভ্যাকসিনের পানি সাধারন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হলেও ভ্যাকসিন করার পূর্বে ডায়লুয়েন্টের তাপমাত্রা অবশ্যই ২০ থেকে ৭০ সে. এর মধ্যে আনতে হবে (ম্যারেক্স ভ্যাকসিনের ডায়লুয়েন্ট ব্যাতীত) । ফ্রিজের নরমাল অংশে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করতে হবে।
৫। ভ্যাকসিন পরিবহনঃ খামারে ভ্যাকসিন নিয়ে যাবার জন্য ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার ব্যবহার করতে হবে। ১২ ঘণ্টার অধিক সময় ক্যারিয়ারে ভ্যাকসিন রাখা উচিৎ নয় অর্থাৎ বরফ ঠিক থাকা পর্যন্ত রাখা যাবে। তবে ভ্যাকসিন ের ভায়াল ক্যারিয়ারে রাখার পূর্বে তা কাগজ দ্বারা প্যাঁচানোর পর পলিথিন দ্বারা মুড়িয়ে বরফের মধ্যে রাখতে হবে। ভ্যাকসিন পরিবহনের সময় যাতে বেশি ঝাঁকি না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভ্যাকক্সিন পরিবহন আর প্রযোগের সময় সরাসরি সূর্যালোক পরিহার করতে হবে।
৬। ভ্যাকসিন প্রয়োগের সময় নির্বাচনঃ অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা সময়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। তবে রাতে বিশেষত মুরগির বিশ্রামের সময় ভ্যাকসিন প্রয়োগ না করাই ভালো।
৭। ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমঃ সঠিক মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। যেমন-লাইভ ভ্যাকসিন সাধারনত চোখে, নাকে বা মুখে ফোঁটা আকারে অথবা খাবার পানির সাথে প্রয়োগ করতে হয় এবং ক্ল্ডি ভ্যাকসিন সাধারনত ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয়। কাজেই যে ভ্যাকসিন যে মাধ্যমে প্রয়োগ করার নিয়ম সেই ভ্যাকসিন সেইভাবে প্রয়োগ করা জরুরী।
** ক্লোরিন, ঔষধ, জীবানুনাশক ও দুর্গন্ধমুক্ত পানিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে।
৮। সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহঃ মুরগিকে আদর্শ পুষ্টিমান সর্মদ্ধ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। যেহেতু মুরগি নিজেও তার দেহে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে তাই দেহে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলের অভাব দেখা দিলে পর্যাপ্ত পরিমান এন্টিবডি তৈরি হবে না। তাই ভ্যাকসিনেশনের আগের দিন থেকে ভ্যাকসিনেশনের পরবর্তী ৩-৫ দিন খাদ্যে ভিটামিন প্রিমিক্সের পরিমান কিছুটা বাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে।
৯। উন্নত ফার্ম ব্যবস্থাপনাঃ দুটি ব্যাচের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২১ দিনের ব্যবধান রাখা, পর্যাপ্ত বায় চলাচলের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন বয়স ও জাতের সংমিশ্রণ পরিহহার করা, এমোনিয়া গ্যাস নিয়ন্ত্রেণ করা এবং ভালো লিটার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
১০। অন্যান্য রোগ দমন কৌশলঃ ভ্যাকসিন থেকে ভাল ফল পেতে হলে কিছু বিশেষ রোগ দমন করা অত্যন্ত জরুরী। যেমনঃ মাইকোপ্লাজমোসিস, সিআরডি, কক্সিডিওসিস, মাইকোটক্সিকোসিস, ক্রণিক সালমোনেলোসিস ইত্যাদি রোগগুলো ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
১১। মানসম্পন্ন ঔষধ ব্যবহারঃ রোগ দমন করতে প্রয়োজন অনুযায়ী মানসম্পন্ন ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। কেননা, নিম্নমানের ওষুধে রোগমুক্ত হয় না বরং তা শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটিযে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে নষ্ট করে দেয়।
১২। ল্যাব টেস্টঃ সম্ভব হলে ভ্যাকসিনেশনের ৩ সপ্তাহ পরে (কিল্ড ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ৬ সপ্তাহ পর) ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা এন্টিবডির টাইটার লেভেল সম্পর্কে ধারনা নিতে হবে।
আশা করি আপনারা উপোরোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল করে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবেন, আর সর্বোচ্চ সফলতা অর্জন করবেন।
Onek-a Vaccine er purbe Vitamin ADE & pore Selenium+Vitamin E Suggest kore. Vaccine er por naki temperature 1 degree increase korle better response pawa jay. Ai information gulo koto tuku correct ?
সহজ করে বললে AD3E আর E-Se দুটোই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং এন্টিস্ট্রেসর হিসেবে কাজ করে। তাই ভ্যকসিনের আগে পরে এগুলো ব্যবহার করে। আর ভ্যকসিনের পর ১ ডিগ্রী তাপমাত্রা বাড়লে ভ্যকসিন ভালো কাজ করে বা রেসপন্স ভালো পাওয়া যায়, কথাটা মনে হয় উল্টো হলো। আসলে জ্বর হলো দেহের অ্যালার্ম সিস্টেম। ইমিউন সিস্টেম ভ্যাকসিনকে high alarming হিসেবে সিগনাল পাঠায়। আর মস্তিষ্কের যে অংশ তাপ নিয়ন্ত্রণ করে মানে hypothalamus তখন দেহের তাপ বিাড়িয়ে দেয়। যেকোন ইনফেকশনেই এই ব্যাপারটা ঘটে থাকে। ভ্যাকসিনকে ইমিউনসিস্টেম মনে করে এটা একটা ইনফেকশন, তাই তাপ বেড়ে যায়।
Vaccine er por temperature 1 degree increase korle better response pawa jay. Authentic Reference dite parbo na kintu Squire er booklet “Hash Murgir Jotno o Chikitsa” page 10 – e tai likha ase .
ঐ বইটাতে বাচ্চাকে তাপ দেয়ার ব্যবস্থাপনায় বলা আছে, “ভ্যাকসিন দেয়ার পর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রী সেঃ বাড়িয়ে রাখতে হবে। এতে করে বাচ্চা ভ্যাকসিনের প্রতি ভালো সাড়া দিয়ে থাকে।” এখানে ব্রুডার ঘরের তাপমাত্রা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটা কি বাস্তবসম্মত হলো? ১ ডিগ্রী সে. বাড়ানো, এটা কিভাবে খামারি লেভেলে মানা সম্ভব? গরমের দিনে তো তাপমাত্রা এমনিতেই বেশি থাকে, তখন কি করবে? আসলে এই বইগুলো কিভাবে লেখা হয় তা তো বোঝেনই!
প্রিয়
তায়ফুর রহমান ভাই
আশা রাখি ভাল আছেন । আপনার কাছে আমার একটি অনুরোধ রইল । আমি নতুন কিছু ব্রাহামা জাতের মোরগ মুরগি সংগ্রহ করেছি। বয়স ৫-৬ মাস এদের কে আমি এখন কি কি ভ্যাক্সিন দিব কতদিন পর পর দিব তার একটি লিষ্ট তৈরী করে দিবেন । জিরো থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যন্ত কি কি ভ্যাক্সিন দিতে হবে তার একটি লিষ্ট তৈরী করে দেবেন। কি কি ভিটামিন খাওয়াতে হবে। মাসের বা সপ্তাহের একটি লিষ্ট তৈরী করে দিবেন। নতুন হিসাবে আপনার সাহায্য আমার আগামি দিনের পথ চলা হয়ে উঠবে বলে মনে করি।বিরক্ত হবেন না আপনার সহযোগিতা পেলে হয়তো আমি ভাল কিছু করতে পারবো।
কি কি ভ্যাক্সিন অতিগুরুপূর্ণ (কত দিন পর পর)
কি কি ভিটামিন অতিগুরুপূর্ণ (কত দিন পর পর)