এ্যানথ্রাক্স বিশেষজ্ঞ টিমের সিরাজগঞ্জ এ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন

অতি সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সিরাজগঞ্জে এনথ্রাক্স (তড়কা) প্রাদুর্ভাব সম্পর্কিত খবরের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’র মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ হতে আমার নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট এনথ্রাক্স বিশেষজ্ঞ টিম গত ২৯ মে, ২০১২ (মঙ্গলবার) সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ ইউনিয়নের অর্ন্তগত নওকৈড় গ্রাম সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে এবং আমরা এনথ্র্রাক্স আক্রান্ত ৩৩ জন মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলি এবং রোগটির প্রাদুর্ভাবের প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করি। সে লক্ষ্যে আমাদের টিম এলাকাটিতে Qualitative Research বা গুনগত গবেষণা করে এবং এনথ্রাক্স জীবাণু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নিশ্চিত নির্ণয়ের জন্য মৃত পশু, পরিবেশ (বিশেষত মাটি) ও আক্রান্ত মানুষ থেকে প্রায় অর্ধশত নমুনা সংগ্রহ করি। পাশাপাশি উক্ত এলাকার জনগনের মধ্যে প্রয়োজনীয় গণ-সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দিনব্যাপী কাজ করি এবং মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগে চলমান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC) এর অর্থায়নে পরিচালিত এনথ্রাক্স সংশ্লিষ্ঠ গবেষণা প্রকল্পের আওতায় তৈরী লিফলেট বিতরণ করি। তাছাড়া এনথ্রাক্স রোগে মারা যাওয়া পশু সহজে চেনার কৌশল এবং এরোগে মারা যাওয়া মৃত পশুর দেহ ও ক্ষরণের সঠিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি হাতে কলমে এলাকার মানুষকে শেখানোর চেষ্টা করি।


আমাদের টিমের অন্যান্য সদস্য হলেন- মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের পি.এইচ.ডি অধ্যায়নরত ডাঃ মোঃ আব্দুল খালেক তালুকদার (এম.বি.বি.এস.); জায়েদুল হাসান, লেকচারার, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ, বাকৃবি, ময়মনসিংহ;  মোঃ শফিকুল ইসলাম, লেকচারার, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ, বাকৃবি, ময়মনসিংহ ও একই বিভাগে অধ্যায়নরত মাস্টার্সের ছাত্র মোঃ মুরশিদুল আহসান। টিমটি পরিচালনার জন্য সার্বিকভাবে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায় মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগে চলমান হেকেপ (HEQEP) প্রকল্প  (CP-007) থেকে।  এলাকাটির মানুষের মধ্যে থাকা অজ্ঞতা, পশুতে এনথ্রাক্স ভ্যাক্সিন না দেওয়া ও দারিদ্রতা এ প্রাদুর্ভাবের প্রধান কারণ বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয় । প্রাথমিক ভাবে, আক্রান্ত এলাকা হতে সংগৃহিত নমুনাতে এনথ্রাক্স জীবাণু (Bacillus anthracis) –এর উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তথাপি, টিম লিডার হিসেবে আমার বিশ্বাস, আমরা  ল্যাবরেটরিতে আরো প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করতে পারব।

নিচে আমাদের কার্যক্রমের কিছু আলোকচিত্র তুলে ধরছি-

 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এনথ্রাক্স বিষয়ক যে কোন পরিস্থিতিকে সামনে রেখে মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগে একটি হেল্প ডেস্ক (Anthrax Help Desk) সার্বক্ষনিকভাবে খোলা রয়েছে। প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ সকলকে অনুরোধ করা হলো। মোবাইল নং- ০১৭১২-৬২০১৫১, ০১৭১৮-২১৮০৮০, ০১৯১৮-০০৮৯৯৫।

 

লেখকঃ ড. কে.এইচ.এম. নাজমুল হুসাইন নাজির

সহযোগী প্রফেসর, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ও প্রধান গবেষক, এনথ্রাক্স সংশ্লিষ্ঠ গবেষণা প্রকল্প, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ।

এটাও দেখতে পারেন

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুঃ জানা যাবে স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ পশু নিবন্ধিত হবে যা গ্রাহকদের পশুগুলোর স্বাস্থ্য ইতিহাস দেখার সুযোগ দিবে। প্রথমবারের মতো, …

৯ মন্তব্য

  1. Thanks. Quick response is performed. Now quick reporting is necessary. I hope it also be done. I wishes for both BSVMPH and vetsbd.com.

  2. ডাঃ তায়ফুর রহমান (এডমিন)

    এনথ্রাক্স বিশেষজ্ঞ টিমকে ধন্যবাদ, দ্রুত রেসপন্স করার জন্য। এভাবেই রোগটি সম্পর্কে যেমন সচেতনতা তৈরি হবে, তেমনি সমাজে ভেটেরিনারিয়ানদের মর্যাদাও বেড়ে যাবে। আমি টিমের সবাইকে সাধুবাদ জানাই।

  3. ডাঃ মোহাম্মদ সরোয়ার জাহান

    আমার আজ খুব ভাল লাগছে এই ভেবে যে, বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগের সম্মানিত টিচারগন দেশে নতুন নতুন রোগের কারন নির্নয় ও তার প্রতিকার বের করার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। এ উদ্যোগ ভবিষ্যেত আরও বেগবান হবে এ প্রত্তাশা করি। আমি এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারলে নিজেকে গর্বিত মনে করবো। ধন্যবাদ নাজমুল ও টিমকে।

  4. Friend Nazmul, Good effort regarding current issue. In your report photo number – 2 (from top), all children are seem to be suffered with malnutrition. But various type of vegetables and foods are available in village—. It is mainly due to improper guidance / ignorance.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.