কুকুরের ভয়ে চরের মানুষ ঘরে বন্দী-কুকুরগুলো এরই মধ্যে ৬০টি ছাগল ও ভেড়া খেয়ে ফেলেছে

ভীতসন্ত্রস্ত লোকজন পারতপক্ষে ঘর ছেড়ে বেরোচ্ছেন না। শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ। একদল হিংস্র কুকুরের ভয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পিপুলবাড়ি ও আরাজি পিপুলবাড়ি গ্রামের মানুষ দেড় মাস ধরে একরকম ঘরে বন্দী। ৩০টি কুকুর এরই মধ্যে ৬০টি ছাগল ও ভেড়া খেয়ে সাবাড় করেছে।

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদের চরে গ্রাম দুটি অবস্থিত। হিংস্র কুকুরের দল শিকারের অবস্থান ঠিক করে ঘেউ ঘেউ করে অন্য কুকুরদের ডেকে আনে। পরে একসঙ্গে আক্রমণ করে শিকার ধরে খায়। এগুলোর আচরণে এলাকার মানুষ ও শিশুদের মধ্যে ভয় ঢুকে গেছে। এগুলো নিধনের জন্য এলাকাবাসী গত রোববার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুর রশীদ জানান, বন্য কুকুরের সঙ্গে মিশে স্থানীয় কুকুরগুলোর আচরণ বদলে যেতে পারে। তবে সাধারণত কুকুর পাগল হলে এ রকম অস্বাভাবিক আচরণ করে থাকে। কী কারণে এগুলো হিংস্র হয়ে উঠেছে, তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য অমিতাভ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
পিপুলবাড়ি গ্রামের সাবেক ইউপির সদস্য ঘুংরু মিয়া জানান, ৩০ থেকে ৩৫টি কুকুর গ্রামে এসে জুটেছে। এগুলোর ভয়ে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ। এরা এতই হিংস্র যে মানুষ দেখলে তেড়ে আসে।
আরাজি পিপুলবাড়ি গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার মাইকিং করে কুকুর নিধনের চেষ্টা করে গ্রামবাসী। বিশাল চর ও পাশে ভারতের সীমান্তবর্তী একটি চর থাকায় এগুলোকে ধরা যাচ্ছে না। লাঠি নিয়ে মারতে গেলে এগুলো ভারতের চরে চলে যায়। এ পর্যন্ত মাত্র দুটি কুকুর মারা সম্ভব হয়েছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব জানান, সমপ্রতি যাত্রাপুর হাট থেকে একা বাড়ি ফেরার পথে নৌঘাটের কাছে একটি কুকুর পথরোধ করে দাঁড়ায়। ভয়ংকর ভঙ্গিতে ডাক শুরু করে এটি। মুহূর্তের মধ্যে আরও কয়েকটি কুকুর এসে তাঁকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে। পরে তিনি চিৎকার করলে ঘাটের লোকজন লাঠিসোঁঠা নিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
ওই এলাকায় কর্মরত এনজিওকর্মী শাহজাহান আলী জানান, ব্রক্ষ্মপুত্র নদ দিয়ে ভারতীয় গরু পারাপারের সময় মৃত গরু খেয়ে কুকুরগুলো মাংসাশী হয়ে উঠেছে। এখন করিডোর দিয়ে গরু পারাপার কমে গেছে। হিংস্র কুকুরগুলো দুর্বল ছাগল-ভেড়ার উপর হামলা করছে। গ্রামবাসীর লিখিত আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে যাত্রাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল গফুর জানান, কুকুরগুলো এরই মধ্যে ৬০টি ছাগল-ভেড়া খেয়ে ফেলেছে।


সূত্র: প্রথম আলো; তারিখ: ২৮ মার্চ,২০১২

লেখকঃ ডা.ওসমান গনি শিশির

Scientific Officer, Ranikhet Vaccine Section, Livestock Research Institute(LRI), Mohakhali, Dhaka. Former Veterinary Surgeon,Upazila livestock Office, Thakurgaon Sadar, Thakurgaon. Former Senior Scientific Officer, livestock Division, Bangladesh Agricultural Research Council (BARC), Farmgate, Dhaka. Former Scientific Officer, Poultry Disease Diagnostic Laboratory, BLRI, Savar, Dhaka. Former Scientific Officer, (Sheep Health) , Goat & Sheep Production Research Division, BLRI, Savar, Dhaka. DVM, 2003 (BAU); MS in Microbiology 2007 (BAU). Cell: 01716-022840 Email: shishir.micro@yahoo.com; www.drosmanshishir.wordpress.com

এটাও দেখতে পারেন

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুঃ জানা যাবে স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ পশু নিবন্ধিত হবে যা গ্রাহকদের পশুগুলোর স্বাস্থ্য ইতিহাস দেখার সুযোগ দিবে। প্রথমবারের মতো, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.