ভূমিকাঃ
বাংলাদেশে খরগোশকে সাধারণত শখের বা পোষা প্রাণী হিসেবে পালন করে থাকে তবে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালন করে প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণ, আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। খরগোশের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু। খরগোশের মাংসে প্রোটিন, শক্তি, মিনারেল ইত্যাদির পরিমাণ বেশি এবং ফ্যাট, সোডিয়াম এবং কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কম। অন্য সব প্রাণীর তুলনায় খরগোশ সহজেই পালন করা যায়। ইহার খাদ্য এবং ব্যবস্থাপনা সহজ বিধায় বাড়ীর মহিলা ও ছেলে মেয়েরা কাজের ফাঁকে এদের যত্ন করতে মোটেই অসুবিধা বোধ করে না।
খরগোশ প্রজাতি
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির খরগোশ দেখা যায় তন্মধ্যে সাদা, কালো, ডোরা এবং খয়েরী রংয়ের খরগোশ বেশী। বাংলাদেশে প্রাপ্ত জাত সমূহ হচ্ছে ডার্ক গ্রে (নেটিভ), ফক্স, ডাচ, নিউজিল্যান্ড লাল, নিউজিল্যান্ড সাদা, নিউজিল্যান্ড কালো, বেলজিয়াম সাদা এবং ছিনছিলা উল্লেখযোগ্য।
খরগোশ পালনের সুবিধা
*ইহা দ্রুত বর্ধনশীল প্রাণী এবং খাদ্য দক্ষতা অপেক্ষাকৃত ভাল।
*একসাথে ২-৮ টি বাচ্চা প্রসব করে এবং একমাস পর পর বাচ্চা প্রদান করে।
*অল্প জায়গায় স্বল্প খাদ্যে, পারিবারিক পর্যায়ে পালন করা যায় এবং অল্প খরচে অধিক উৎপাদন সম্ভব।
*খরগোশ এর মাংস অধিক পুষ্টি ও উন্নত মানের এবং সব ধর্মের লোকই ইহার মাংস খেতে পারে ।
* মাংস উৎপাদনে পোল্ট্রির পরেই খরগোশের অবস্থান।
*রান্না ঘরের উচ্ছিষ্টাংশ, বাড়ীর পাশের ঘাস, লতা পাতা খেয়ে এর উৎপাদন সম্ভব।
*পারিবারিক শ্রমের সফল ব্যবহার করা সম্ভব।
বাসস্থান
* বহুতল বিশিষ্ট খাঁচায় বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ প্রতিপালন করা যায়। বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে খরগোশ ছেড়ে পালন করা যায় তবে বাচ্চা দেয়ার সময় এরা নিজেরাই গর্ত খুড়ে নিজের গায়ের লোম ছিঁড়ে বাসা তৈরি করে। খাঁচায় পালন করা হলে বাচ্চা দেয়ার সময় মেটারনিটি বক্স বা নেট ব্যবহার করার
প্রয়োজন পড়ে।
• একটি প্রাপ্ত বয়স্ক খরগোশের খাঁচায় জায়গার পরিমাপ (দৈর্ঘ্য -৭৫ সেঃ মিঃ, প্রস্থ- ৪৫ সেঃমিঃ এবং উচ্চতা – ৩৫ সেঃ মিঃ) ও মেটারনিটি বক্সের পরিমাপ
(দৈর্ঘ্য – ৪০ সেঃ মিঃ , প্রস্থ-৩০ সেঃমিঃ, উচ্চতা – ২৫ সেঃ মিঃ হওয়া ভাল।
খাদ্য ব্যবস্থাপনা
* বয়স ও জাত ভেদে খরগোশের খাদ্য গ্রহণ ও পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়। একটি বয়স্ক খরগোশের খাদ্যে পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা
ক্রুড প্রোটিন = ১৭-১৮% ,আঁশ =১৪%, খনিজ=৭%, বিপাকীয়
শক্তি =২৭০০ কিলো ক্যালরি /কেজি
* খাদ্য গ্রহণঃ বয়স্ক খরগোসের জন্য (১৩০-১৪৫ গ্রাম/দিন, দুধালো খরগোসের জন্য ২৫০-৩০০ গ্রাম/দিন ও বাড়ন্ত খরগোসের জন্য ৯০ গ্রাম/দিন সরবরাহ করতে হবে।
* খাদ্য উপাদান
সবুজ শাকসবজি: ঋতু ভিত্তিক সবজি, পালং শাক, গাজর মুলা, শসা, শাকের উচ্ছিষ্টাংশ, সবুজ ঘাস ইত্যাদি।
দানা খাদ্যঃ চাল, গম, ভুট্টা, তৈলবীজ ইত্যাদি তবে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালনের জন্য মুরগীর (ব্রয়লার)
জন্য তৈরিকৃত মিশ্রিত খাদ্য খরগোসের রেশন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়া নিম্ন লিখিত উপাদানগুলো উল্লেখিত পরিমানে ব্যবহার করেও বাড়িতে খরগোশের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করতে পারেন।
খাদ্য উপাদান | পরিমাণ (কেজি) |
ভুট্টা ভাঙ্গা | ৫৪ |
চালের কুড়া | ১৬ |
সয়াবিন মিল | ২৩ |
প্রোটিন কনসেনট্রেট | ৪ |
ডিসিপি | ২ |
ভিটামিন খনিজমিশ্রিত | ০.২৫ |
লাইসিন | ০.১০ |
মিথিওনিন | ০.১৫ |
লবন | ০.৫০ |
মোট | ১০০.০০ |
প্রজনন
খরগোশ সাধারণত: ৫-৬ মাস বয়সে প্রথম প্রজনন-ক্ষম হয় । গর্ভবতী খরগোশ ২৮-৩৪ দিনের (জাতভেদে) মধ্যে বাচ্চা দেয় এবং বাচ্চার ওজন খরগোশের শারীরিক ওজনের উপর নির্ভরশীল এবং ইহা সাধারনতঃ দৈহিক ওজনের ২% হয়। খরগোসের দুগ্ধ-দান কাল সময় ৬-৮ সপ্তাহ এবং এই সময় ওজন হলো ৮০০-১২০০ গ্রাম। খরগোশ প্রতিবারে ২-৮ টি বাচ্চা প্রদান করে এবং একবার বাচ্চা দেয়ার ১ মাস পরেই আবার বাচ্চা দিতে পারে। প্রজননের সময় প্রজননের সময় একটি পুরুষ খরগোশের সাথে ৩-৪টি স্ত্রী খরগোশ রাখা যেতে পারে তবে গর্ভবতী খরগোশকে পৃথক করে রাখা ভাল।
বাচ্চার যত্ন
যদি ছোট প্রাণী খরগোশ একসঙ্গে ৬-৮টি বাচ্চা দেয় তাই এই সময় প্রথম দশ দিন এই বাচ্চাগুলোর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। যেমন- মা খরগোশ হতে দুধ খেতে সাহায্য করা, প্রয়োজনে ফিডারে করে দুধ খাওয়ানো, ভাতের মাড় বা দুধে বিস্কুট ভিজিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। প্রথম দশ দিন নরম কাপড় দিয়ে বাচ্চাগুলোকে অবশ্যই ধরতে হবে।
খরগোশের রোগ–বালাই
সব প্রাণীরই কিছুনা কিছু রোগ-বালাই আছে তবে খরগোশের ক্ষেত্রে তুলনামূলক-ভাবে রোগ-বালাই কম। খরগোশ পরিচ্ছন্ন জায়গায় থাকতে বেশী পছন্দ করে। তাই ইহার ঘর সর্বদাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘরে ২৯ সেঃ এর বেশী তাপমাত্রা হলে পুরুষ খরগোশ অনুর্বর হয়ে যায়। তাছাড়া কক্সিডিওসিস, গলাফুলা, পাস্তুরিলোসিস প্রভৃতি কয়েকটি রোগ খরগোশে সাধারনতঃ দেখা যায়। অসুস্থ খরগোশের চোখ ফ্যাকাসে, কান খাড়া থাকেনা, লোম শুষ্ক ও রুক্ষ দেখায়, খাদ্য ও পানি খেতে অনীহা প্রকাশ করে দৌড়াদৌড়ি কম করে ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়। ঘর সর্বদাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে সকল রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
খরগোশ পালনে আর্থিক লাভ
কিছু দানাদার খাবার এবং বাড়ির আশেপাশের ঘাস, লতা-পাতা এবং উচ্ছিষ্টাংশ খাইয়ে পারিবারিক পর্যায়ে ২০ টি খরগোশ প্রতিপালনে পারিবারিক পুষ্টির পুষ্টির চাহিদার পূরণের সাথে সাথে মাসিক ২১০০.০০ টাকা আয় করা সম্ভব যা অন্য কোন পদ্ধতিতে এত স্বল্প ব্যয়ে সম্ভব নয়।
সূত্র এখানে।
খরগোশের বাচ্চা যে কোথায় পাওয়া যায়, কেউ যদি জানেন তবে এখানে মন্তব্য করে জানাতে পারেন।
মুক্তাগাছা সদর, ময়মনসিংহ | বুধবার হাট বসে
It need total information .
খরেগাশ প্রাপ্তিস্থান
১ ঢাকার কাটাবন
২.খুলনার নিউমাকেট
৩.বরিশালের হাসপাতাল রোড
৪.রাজশাহি রেল স্টেশন রোড …………………..
দাম : ১-২ মাসের বাচ্চার দাম ৩০০ টাকা ( প্রায়)
চমৎকার পোস্ট।
Dhakar Nababpure pakhi bikkir dokane
আমি এক জোরা খরগোশ কিনতে চাই কিন্তু কোথাই পাওয়া যায় তা আমি জানি না। এক জোরা খরগোশের দাম কত তা আমি জানতে চাই।আমাকে অবশ্যই জানাবেন।
amar khorgosh ase.apnar dorkar hole mail korun.
১ দিন বয়সি হাসের বাচ্চা কোথায় পাওয়া যাবে? (সরকারি খামার ব্যতীত)?? দাম কত পড়বে?
Student
খরগোশ এর মাংসের বাজার ব্যবস্থা সম্পর্ক যদি লিখতেন !!!
আমি ময়মনসিংহ শহরে বাস করি.কোথা থেকে খরগোস পাব জানতে পারি?
Muktagasa and Kalmaknda upazila
Hi
খরগোশের বাচ্চাকে কিভাবে দুধ পান করাতে হয় নিচের ভিডিওতে দেখুন
https://youtu.be/tw_pv0NVUqU
Die Geschichte von einem prächtigen Paar
Peter Hase und Lotta Weissfell