মুরগির পালক থেকে পলিথিন!

সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আজ আপনাদের একটি দারুন খবর দিতে চাই। এবার আমাদের প্রিয় পোল্ট্রী থেকে প্রাপ্ত আরেকটি বর্জ্য কাজে লাগতে যাচ্ছে। আর সেটি হলো পালক। আসুন দেখি কিভাবে-


পৃথিবীতে প্রতি বছর মুরগির পালক থেকে প্রায় বিলিয়ন পাউণ্ড বর্জ্য উৎপন্ন হয়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বর্ণনা করেছেন কেমন করে বর্জ্য স্তুপ থেকে পালক সংগ্রহ করে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করা সম্ভব। এ ধরনের প্লাস্টিকের নাম  থার্মোপ্লাস্টিক, যা পানিতে দৃঢ় থাকবে এবং যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যও থাকবে অটুট।

সুন্দর পালকগুলো আর নষ্ট হবে না

প্লাস্টিকের অন্যতম প্রধান গ্রুপ থার্মোপ্লাস্টিক, যার মধ্যে নাইলন, পলিথিন, পলিস্টাইরিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত। টুথব্রাশ, বোতল, গাড়ির বাম্পার থেকে শুরু করে হাজার প্রকার নিত্য ব্যবহার্য ও শিল্পজাত পণ্য তৈরিতে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে। তাপ দিয়ে তরল থেকে চূড়ান্ত অবস্থায় এনে শক্ত করা এবং পরে আবার গলিয়ে পুনর্গঠন করা যায় বলে এর নাম থার্মোপ্লাস্টিক। পালক থেকে গঠিত অনেক থার্মোপ্লাস্টিক ভেজা অবস্থায় কাজ করতে পারে না এবং এরা একবার গঠিত হলে আর গলানো যায় না। উভয় প্লাস্টিকই তেল অথবা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে প্রাপ্ত উপাদান থেকে প্রস্তুত। পেট্রোলিয়ামের সরবরাহ, দাম ও অনুমোদন যোগ্যতার জন্য অনেক বৈজ্ঞানিক দলই চেষ্টা করছে বিকল্প উপাদান দিয়ে কাজ করতে। কৃষিজ বর্জ্য এবং এরুপ পুন:নবায়নযোগ্য সম্পদ ব্যবহার করে বায়োপ্লাস্টিক তৈরি করে অধিক অনুমোদনযোগ্য ও প্রকৃতিনির্ভর সমাজ গঠন করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। এক্ষেত্রে মুরগির পালক এক উৎকৃষ্ট প্রত্যাশা, কারণ তা প্রচুর ও বিনা খরচে পাওয়া যায়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর মুরগির পালক থেকে তিন বিলিয়ন পাউণ্ডেরও বেশি বর্জ্য পাওয়া যায়। এই পালকগুলো প্রক্রিয়াজাত করে নিম্নস্তরের প্রাণির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে এসব প্রাণির নানাবিধ অসুখ হয় এবং প্রচুর পালক অব্যবহৃত থেকে যায়। মুরগির পালক প্রধানত কেরাটিন নামক দৃঢ় প্রোটিন থেকে তৈরি হয়, যা চুল, শিং, ক্ষুর ও পশমে পাওয়া যায়- প্লাস্টিকে দৃঢ়তা ও স্থায়িত্ব দানে এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। থামোপ্লাস্টিককে পানিরোধী করার জন্য মুরগির পালককে রাসায়নিক দ্রব্য, যেমন মিথাইল অ্যাক্রিলেক দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। মিথাইল অ্যাক্রিলেট একটি বর্ণহীন তরল, যা নেইল পলিশে পাওয়া যায়। পলিমারকরণ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে অণুগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি যুক্ত হয় এবং বৃহৎ চেইন গঠন করে প্লাস্টিক তৈরি করে।

সংবাদটি আগে এখানে প্রকাশিত।

লেখকঃ ডাঃ তায়ফুর রহমান

ডাঃ তায়ফুর রহমান; ডিভিএম, এম এস, এমপিএইচ ; ন্যাশনাল টেকনিক্যাল এডভাইজার-এপিডেমিওলজি, জাতিসঙ্ঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা, ঢাকা; ব্লগ এডমিনিষ্ট্রেটর, ভেটসবিডি

এটাও দেখতে পারেন

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুঃ জানা যাবে স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ পশু নিবন্ধিত হবে যা গ্রাহকদের পশুগুলোর স্বাস্থ্য ইতিহাস দেখার সুযোগ দিবে। প্রথমবারের মতো, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.