বাংলাদেশে মোট ১.৬৯ মিলিয়ন ভেড়া আছে। জাতীয় আয় ও সং খ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে পশুসম্পদের মধ্য ভেড়ার স্থান চতুর্থ। এ দেশে প্রাপ্ত ভেড়া উষ্ম ও আদ্র পরিবেশে খাপ খাইয়ে বছরে দুইবার বাচ্চা দেয় এবং প্রতিবারে ২-৩ টি বাচ্চা দেয়। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী ও বাচ্চার মৃত্যুর হার অত্যন্ত কম। চরম অবহেলিত অবস্থায় শুকনা খড় এবং শস্যর অবশিষ্ট অংশ খেয়েও একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ভেড়া ১৫-২০ কেজি হতে পারে। একটি ভেড়া ১.৫-২.০ কেজি পরিমাণ পশম উৎপাদন করে। ভেড়া উৎপাদন বৃদ্ধির হার ১২%, যাহা গরু, ছাগল ও মহিষের তুলনায় অনেক বেশী। বাংলাদেশে ভেড়ার ঘনত্ব বরেন্দ্র এলাকা, যমুনা অববাহিকা এবং উপকুলীয় এলাকার জেলাগুলোতে বেশী। আংশিক অথবা সম্পূর্ণ আবদ্ধ আবস্থায় ভেড়া পালন করা য়ায়, সেক্ষেএে প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক ভেড়ার জন্য ৮-৯ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন হয়। ভেড়ার চালা, চন,টিন অথবা পাকা যে কোনটিই হতে পারে। দুই থেকে তিন বাচ্চা বিশিষ্ট ১ টি ভেড়ীর দৈনিক ২.৫ থেকে ৩.০ কেজি কাঁচা ঘাস, ২৫০-৩০০ গ্রাম দানাদার খাবারের প্রয়োজন হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক পাঁঠার দৈনিক ২.৫ – ৩.০ কেজি কাঁচা ঘাস ও ২০০-২৫০ গ্রাম দানাদার খাবার প্রয়োজন পড়ে। ভেড়ার দানাদার খাদ্য হিসেবে: চাল, গম, ভুট্টা ভাংগা, চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, মাস কলাই / খেসারী /মুসুর/মুগ কলাই/তিলের খৈল/নারিকেল খৈল ও লবণ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। জন্মের সময় ভেড়ার ওজন ১.০-১.৫০ কেজি হয়ে থাকে। বাচ্চা জন্মের পর পরই আধ ঘণ্টার মধ্য শাল দুধ খাওয়ানো হয়। ভেড়ার বাচ্চার দৈনিক ২০০-২৫০ গ্রাম পানির প্রয়োজন হয়। বাচ্চা সাধারণত ২-৩ মাসের মধ্যই মায়ের দুধ ছাড়ে। ভেড়ার পাঁঠা বাচ্চাকে ২-৪ সপ্তাহের মধ্য অন্ডকোষ কেটে খাসী করা প্রয়োজন। বাড়ন্ত ভেড়ীকে সাধারণত ১৩-১৪ কেজি ওজনে ৭-৮ মাস বয়সে পাল দিতে হবে। ভেড়ী ২০-৩৬ ঘন্টা গরমে থাকে কিন্তু ১২-১৪ ঘন্টার মধ্যই ইহাকে পাল দেয়া প্রয়োজন। ভেড়ী সকালে গরম হলে বিকালে আর বিকালে গরম হলে সাকালে পাল দিতে হবে। সম্ভব হলে দুইবার পাল দেয়া বেশী কার্যকরী।বাচ্চা দেয়ার পর ভেড়ী ২১-৪৮ দিনে গরম হয়। ভেরীর পাল নিশ্চিন্ত হওয়ার পর বাচ্চা সাধারণত ১৪০-১৫০ দিন পেটে থাকে। এ দেশীয় ভেড়াতে কৃমি, আমাশয়, বসন্ত, নিউমোনিয়া, এন্টারটক্ক্সিমিয়া, পেট ফাঁপা ও ক্ষুরা ইত্যাদি রোগ দেখা যাই। প্রতি ৬ মাস পর পর ভেরাকে কৃমি নাশক ঔষধ খাওয়ানো দরকার। উকুন, আঠালী, মায়াসিস ইত্যাদির আক্রমণ থেকে ভেরাকে রক্ষার জন্য প্রতি ১৫ দিন পর পর ০.৫% মেলাথিয়ন দ্রবণে গোসল করানো প্রয়োজন। বছরে ২ বার পি পি আর ও একথাইমা রোগ নাই বললেই চলে। ভেড়ার মাংস নরম, রসালো ও বিশেষ কোন গন্ধ নেইএবং ইহার চামড়া বাজাবে বিক্রি করা য়ায়। ভেড়া ভুমিহিন, ক্ষুদ্রও মাঝারী চাষিদের অতিরতক্ত আয়ের উৎস। ৩০ টি ভেড়ার খামার থেকে বছরে ৩০,০০০/- থেকে ৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয় হয়। বাংলাদেশে অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় ভেড়া পালন খুবই লাভজনক।
সুএ : সমাজ ভিত্তিক ও বাণিজ্যিক খামারে দেশী ভেড়ার উন্নয়ন ও সংরক্ষণ প্রকল্প, (ডি.এল.স) নোটবুক।
Vetsbd Livestock related only Bangla blog