বোভাইন এফিমেরাল ফিভার গবাদি পশুর একটি সংক্রামক ভাইরাস জনিত রোগ।এরোগ আকস্মিক হয় এবং তিন দিন স্থায়ী থাকে বলে এরোগকে ‘তিন দিনের জ্বর’ বা ‘থ্রি ডেজ সিকনেস’ বলে। ১৮৬৭ সালে এরোগ আফ্রিকায় প্রথম দেখা য়ায়। বর্তমানে আফ্রিকাসহ অ্ষ্ট্যেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অধিকাংশ এশিয়াভুক্ত দেশে এরোগের প্রাদুভাব সম্পর্কে জানা য়ায়। বাংলাদেশ ও ভারতে গবাদিপশুর এরোগ হবার তথ্য রয়েছে। গৃহপালিত পশুর মধ্যে প্রধানত গরু এরোগে আক্রান্ত হয়। তবে মহিষও এরোগে আক্রান্ত হবার তথ্য রয়েছে । বন্য রোমন্থক প্রানী ও মহিষ এই ভাইরাসের বিজারভার হোস্ট (গরুর জন্য) হিসেবে কাজ সম্পাদান করে। মড়ক আকারে এরোগ হবার তথ্য রয়েছে।সব বয়সী গরু এরোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে প্রাপ্ত বয়স্ক গরু অধিক সং বেদনশীল। পরীক্ষামূলক ভাবে ৩ মাস বয়সের বাছুরে এরোগ সংক্রমন ঘটানো হয়েছে । কলস্ট্রাম না খাওয়া বাছুর এই ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল। অবশ্য ৬ মাসের অধিক বয়সী গরুতে ক্লিনিক্যাল উপসর্গ প্রকাশ পায়। এরোগে আক্রান্তের হার ৫-১০০% এবং মৃত্যুর হার ২%। রক্তশোষক কীত-পতজ্ঞ আক্রান্ত পশু হতে সুস্থ পশুতে এরোগের ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে। প্রধানত মশা, ডাঁশ, (Sand fly), এই ভাইরাস সংক্রমন ঘটায়। কীত-পতঙ্গের প্রাদুভাব বৃদ্ধি পায়। আক্রান্ত পশু্র জ্বরের সময় সামান্য পরিমাণে রক্ত (০.০০২ মিলি.) সুস্থ পশুর শিরায় ইনজেকশন করলে ভাইরাস সংক্রমন হয়।
কারণতত্ত:
Rhabdoviridae গোএভুক্ত Vesiculovirus জেনাসের Bovine Ephemeral Fever এরোগের কারণ।
লক্ষণ:
০১ .আক্রান্ত পশুর ক্ষুধামান্দ্যা ও কাঁপুনি সহ প্রচণ্ড জ্বর হয়।
০২. নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে তরল পদার্থ পড়তে থাকে।
০৩. পরবর্তীতে দেহের বিভিন্ন অস্থিসন্ধির স্থানে ব্যাথ্যা হয় ফলে পশু খুঁড়িয়ে হাটে।
রোগ নির্ণয়:
প্রধানত গ্রীষ্ম ও বর্ষার সময় আকস্মিক কাঁপুনি দিয়ে জ্বর ও তিন দিন স্থায়ী, পা খোঁড়ানো এরোগ নির্ণয়ে বৈশিষ্ট্যপুন উপসর্গ বলে ধরা হয়।
চিকিৎসা:
এটি যেহেতু ভাইরাস জনিত রোগ, তাই সরাসরি কোন চিকিৎসা নাই। তবে আক্রান্ত পশুর দ্বিত্বীয় পর্যায়ে জীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য অ্যান্টিবায়টিক অক্সিটেট্টাসাইক্লিন ইনজেকশন, ব্যাথা উপশমের জন্য সোডিয়াম স্যালিসাইলেট ইনজেকশন এবং জ্বর কমানোর জন্য মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে ও ছায়ায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
সুএ-
০১ পশু পালন ও চিকিৎসাবিদ্যা – ডঃ এম এ সামাদ ।
০২ Wikipedia : Bovine Ephemeral Fever