নলছিটিতে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী

স্থানীয় পর্যায়ে প্রাকৃতিক উপায়ে ‘তুষ পদ্ধতিতে’ দেশী স্বাদের সোনালী জাতের মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করা হচ্ছে। এই প্রথম ঝালকাঠি জেলার নলছিটিতে উন্নত জাতের মুরগির বাচ্চা উৎপাদন ও চাষ করে সফলতা অর্জন করছে একটি প্রতিষ্ঠান।তুষ পদ্ধতিতে বাচ্চা উৎপাদনকারী নলছিটি উপজেলার ডেবরা গ্রামে ‘সাফিন আদর্শ খামার’ বেশ কিছুদিন ধরে বাচ্চা উৎপাদন করে আসছে। তবে বগুড়া থেকে আমদানীকৃত বাচ্চার চেয়ে এর উৎপাদন ভাল বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মত প্রকাশ করেছেন। উৎপাদিত মুরগির গোশত অন্য মুরগির চেয়ে সুস্বাদু। এরা বছরের ৩শ ৬৫ দিনই ডিম দেয়। বাজারে এ মুরগির চাহিদা বেশী থাকার ফলে ব্যবসায়ীরা লাভবানও হচ্ছে।ফার্ম মালিক পক্ষ জানিয়েছেন, দৈনিক ৪ জন শ্রমিক কাজ করছে এখানে। কর্মচারী সেন্টু মাঝি, দোলন, আব্দুর রহিম ও মজিবর রহমান ফার্মে কাজ করেন। তারা বিভিন্ন দপ্তরের প্রশিক্ষন প্রাপ্ত। প্রতিমাসে ৪ বার ১০ হাজার করে গড়ে ৪০ হাজার বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে। শ্রমিকরা দৈনিন্দিন ফার্মের ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে খাবার সরবরাহ করছে। এখানকার উৎপাদিত মুরগির বাচ্চা এ অঞ্চলের আবহাওয়া উপযোগি ও স্বাস্থ্যসম্মত বলে প্রানী সম্পদ বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন। এছাড়া অন্য মুরগির চেয়ে আগে ১০০ দিন বয়স থেকে ডিম পাড়া শুরু করে।মুরগির ফার্ম ব্যবসায়ীদের মতে, মুরগি চাষে তুষ পদ্ধতির বাচ্চার মৃত্যু হার কম। এদের পেছনে ঔষধ ব্যয় অনেকটা কম। বিদ্যুৎবিহিন তুষ পদ্ধতিতে বাচ্চা চাষে স্থানীয় এ প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিক মজুরী দিয়ে লাভবান হচ্ছে। আত্মপ্রত্যয়ী এ যুবকের নাম মিজানুর রহমান মাসুদ। শিক্ষিত এ তরুন নিজেকে সমাজ উন্নয়নে নিবেদিত করার প্রয়াস নিয়ে স্থানীয় বেকারদের নিয়ে কাজ করছেন। নিজেকে নিয়ে ভাবনার সময় তার কাছে না থাকলেও এলাকার শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান করার চিন্তা করছেন প্রতিনিয়ত। তিনি এলাকায় এ ধরণের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে এলাকাটিকে বেকারমুক্ত করে মডেল গ্রাম হিসেবে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।ইতি মধ্যে তিনি এলাকার বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।  হঠাৎ তিনি এ পদ্ধতিতে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করে এলাকাবাসিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রতিবাদী এ যুবক তার নেতৃত্বে মাছ চাষের সাথে দেশী ও বিদেশী জাতের হাঁসও পালন করছেন। ঘেরের পাশে নানা জাতের সবজি চাষ করে সেখান থেকেও কিছু লোক কাজ করছেন। ফার্মটিতে বর্তমানে দেশী-বিদেশী জাতের হাঁস রয়েছে। গড়ে দৈনিক এক হাজার ডিম উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদনকৃত ডিম স্থানীয় চাহিদা শেষে জেলা শহর ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন স্থানে চালান দেয়া হচ্ছে।এদিকে, ফার্মের বাচ্চা বিক্রির জন্য জেলা শহর ঝালকাঠি কাসারীপট্টির হাফিজা পোল্টি ফিড এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।


লেখকঃ ডাঃ পলাশ সরকার

ডা.পলাশ সরকার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার (ভার:), নলছিটি, ঝালকাঠী । মোবাইল: ০১৭৩১-৬৭৯৩৬৭, ফোন:- ০৪৯৫৩-৭৪১৭৬, ইমেইল: palash.vs@gmail.com

এটাও দেখতে পারেন

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনলাইন গবাদি পশু শনাক্তকরণ এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুঃ জানা যাবে স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস

প্রাথমিকভাবে ৫০,০০০ পশু নিবন্ধিত হবে যা গ্রাহকদের পশুগুলোর স্বাস্থ্য ইতিহাস দেখার সুযোগ দিবে। প্রথমবারের মতো, …

৩ মন্তব্য

  1. ডাঃ তায়ফুর রহমান (এডমিন)

    ভেটসবিডিতে আপনাকে স্বাগত। খুব ভালো লাগলো সুদূর নলছিটি, ঝালকাঠি থেকে আপনি লিখছেন।

  2. শুভেচ্ছা রইলো।

    তুষ পদ্ধতি হাতে কলমে কোথায় শেখা যায়, এ ব্যাপারে তথ্য জানালে উপকৃত হতাম।

    সাফিন আদর্শ খামার এর মালিকের ফোন নাম্বার কি পেতে পারি?

  3. স্যার লেখাটি লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্রবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.