অব্যহত হরতালের কারনে দেশের দুগ্ধ ও পোল্ট্রি খামারগুলি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। খামারিরা তাদের খামারের উৎপাদিত দুধ ও ডিম নিয়ে পড়েছেন ভীষণ বিপাকে। হরতালের কারনে দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দুধ সংগ্রহ করা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা বলছে হরতালে তাদের দুগ্ধবাহী গাড়ীর ওপর হামলা হয়েছে, গাড়ী পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাই তারা আর হরতালের ভেতর গাড়ী বের করতে চাননা। আর তাতে বিপাকে পড়েছে খামারীরা। বাধ্য হয়ে তাদের উৎপাদিত দুধ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে অত্যন্ত কম মূল্যে। যা দিয়ে খামারের খরচ চালানোই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা পোল্ট্রি খামারিদেরও। পাইকারগণ ডিম ঢাকায় পাঠাতে পারছেন না বলে তারা খামার থেকে আর ডিম সংগ্রহ করা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে এসব কাঁচা পণ্য নিয়ে মহা বিপদে পড়েছেন খামারিরা।
অপরদিকে হরতালের কারনে এসব গবাদি পশু ও পোল্ট্রি খাদ্যের সরবরাহ কমে আসায় সমস্যার আকার আরো জটিল হয়ে পড়েছে। যে সামান্য সরবরাহ হচ্ছে তার দামও আকাশ ছোয়া। এর মধ্যেই কোনরকমে ‘ম্যানেজ’ করে চলছেন খামারীরা। এমনই একজন খামারী পাবনার মোঃ এন্তাজ। ২২০০ মুরগির একটি খামার রয়েছে তার। কথা হয় তার সঙ্গে-তিনি বলেন, “মুরগি আমার সুস্থই আছে, কিন্তু আমি শ্যাষ হয়া গেছি, ডিমতো কেউ লিচ্ছেই (নিচ্ছেই) না। হরতালের আগে ডিমের বাজার ছিল ৫৬০ ট্যাহা কর্যা, কিন্তু এ্যাখন তো তাও লিচ্ছে না।” জিজ্ঞেস করলাম, খাদ্যর ব্যবস্থা কিভাবে কি করছেন? জবাবে তিনি বলেন, “এ্যাহন আর কোন খাদ্যই নিয়ম কর্যা খাওয়াইবার পারত্যাছিনা। আজ এই কোম্পানির খাদ্য তো কাইল আরেক কোম্পানির খাদ্য। যহন যেডা পাই, তহন হেইডই খাওয়াই। এরহম করাতে ডিমের উৎপাদনও কম্যা গ্যাছে। এইরহম যদি চলতেই থাকে, তালি আর আমাগারে ব্যবসা করা হবি না।”
কথা হয় একজন খাদ্য বিক্রেতার মোঃ শারিফ-এর সঙ্গে। তিনি বলেন- “আমার প্রতি মাসে প্রায় ৪০০টন খাবার লাগে, কিন্তু হরতালের কারনে গত দৃই সপ্তাহ যাবৎ আমি কোম্পানি থেকে খাদ্য সরবরাহ না পাওয়ায় আমার খামারীদেরকেও খাদ্য সরবরাহ করতে পারছি না।” তিনি পোল্ট্রি খাদ্য ও ডিম পরিবহনকারি গাড়ীকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার অনুরোধ করেন।
নিচের ভিডিওতে হরতালে দুগ্ধ খামারিদের সমস্যা নিয়ে একুশে টিভির একটি প্রতিবেদন তুলে ধরছি।