
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু কিছু ব্যাক্তিত্ব থাকেন , যাদের জন্য সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে, আমার সুযোগ হয়েছিল এমন ই এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জানার। তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ১৩ তম ব্যাচের এক জন গুনী ব্যাক্তিত্ব মোঃ মতিউর রহমান ( মতি ভাই ) । তার সম্পর্কে জানার পর আমার মনে হল এমন এক জন ব্যাক্তির জন্য কিছু লেখা উচিত , তাই লিখছি। আপনাদের জন্য আমি মতি ভাই এর অনুষদের এক যোগ্য ছোট ভাই লেভেল ৪ সেমিষ্টার ১ এর ছাত্র রাহুল দাস তালুকদারের মন্তব্য এর কিছু অংশ তুলে ধরছি । মতি ভাই সম্পকে রাহুল দাস বলেন, “বাংলায় একটি প্রবাদ আছে যে, “ চেনা ব্রাক্ষনের পৈতা লাগে না ”। প্রবাদটির সবচেয়ে ভালো উদাহরন আমাদের মতি ভাই। প্রথমত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদে টানা আট বার প্রথম স্থান অধিকার করা একজন মেধাবী ছাত্র এবং সেই সাথে সবচেয়ে সফল সংগঠক। ভেটেরিনারি সায়েন্স পড়ে ৩.৮৮ পাওয়া, অন্য যেকোন রেজাল্টের সাথে তুলনা করা যায়না। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি অভিনয় , লেখালেখিতেও সমান পারদর্শী। মতি ভাই এমন একজন মানুষ যিনি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করেও পরীক্ষায় ঈর্ষাণ্বীয় সাফল্যের নজির স্থাপন করেছেন। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোন অনুষদ, এমন কোন ছাত্র-ছাত্রী নেই যারা মতি ভাইকে মনের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করে না। আর ক্যাম্পাসের শিক্ষকদের মধ্যমণি এই মতি ভাই কর্মচারি ভাইদের কাছে ও ছিলেন সমান জনপ্রিয়। তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত সংগঠন “কৃষ্ণচূড়া” এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন আমাদের প্রাণপ্রিয় মতি ভাই। আর তার অভিনীত নাটকের কথা কি বলব, যা সচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেনা। সিকৃবি মিলনায়তনে নাটকের এই জলন্ত প্রতিভার অভিনয় আমরা সবাই মিস করব।
পড়াশোনার ব্যাপারে যেকোন সাহায্য? মতি ভাই তৈরি। ক্যাম্পাসের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ছাত্ররা পড়াশোনার ব্যাপারে কোন কিছু বুঝতে হলে বলে “মতি ভাই, আজ কিন্তু এমব্রায়োলজি বুঝিয়ে দিতেই হবে। কখন আসবো বলেন?” তাছাড়া
ক্যাম্পাসের প্রতিটি অনুষদের ছাত্ররা, সব সময়ই মতি ভাইয়ের কাছ থেকে তাদের সমস্যার সমাধান খুবই সাবলীল ভাবে পেত। এবার আড্ডায় আসা যাক! আড্ডার আসরে মতি ভাইয়ের জুড়ি বলে শেষ করা যাবেনা। আড্ডার আসরে মতি ভাই থাকলে সবাই
শুধু দর্শকের ভূমিকায় অভিনয় করতেই আনন্দ পায়। মতি ভাইয়ের রসাল কথা ও ছন্দময় অঙ্গভঙ্গিমা সবার মন ভরিয়ে তুলে। তবুও সবার স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনে জমে উঠে আড্ডা। মতি ভাইয়ের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো একজল সফল প্রাণিচিকিৎক হিসেবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় গৃহপালিত প্রাণিদের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি ব্যাপক সাফল্য ও প্রশংসা কুড়িঁয়েছেন। জুনিয়র ছোটভাইদের খাওয়ানোর ব্যাপারে ও মতি ভাই ছিলেন হাজী মুহাম্মদ মুহসীন। উনার সাথে এত “ফুসকা
পার্টি” করেছি যা বলে শেষ করতে পারবনা। মতি ভাই এমন একজন মানুষ যার মাঝে কোন আত্নঅহংকার নেই। তাই ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীর কাছে মতি ভাই একজন শ্রদ্ধার পাত্র। মতি ভাই সম্পর্কে বললে আমি আমার কথা শেষ করতে পারবনা। আমার মনে একজন মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া কিন্তু মানুষের ভালোবাসা । আজ সত্যিই মনে হচ্ছে মতি ভাই তার ক্যাম্পাসে সেই ভালোবাসাঅর্জন করতে পেরেছেন ।